মুরাদনগরে ঈদের এক সপ্তাহ পার হলেও অতিরিক্ত ভাড়ার কাছে জিম্মি যাত্রীরা
ডেস্ক রিপোর্টঃ কুমিল্লার মুরাদনগরে ঈদের এক সপ্তাহ পেড়িয়ে গেলেও অতিরিক্ত ভাড়ার কবল থেকে মুক্তি পায়নি যাত্রীরা। ঈদের ইমেজ শেষ হয়ে গেলেও অতিরিক্ত ভাড়ার গেড়াকল থেকে মুক্তি পাবে এমনটা ভেবে অধিকাংশ নিন্ম আয়ের লোকেরা এক সপ্তাহ পরে কর্মস্থলের দিকে রওয়ানা করেন। কিন্তু জেলার কোম্পানীগঞ্জ আন্ত:জেলা বাস টার্মিনালে এসে এসব নিন্ম আয়ের মানুষেরা অতিরিক্ত ভড়া এবং টিকিট নিয়ে কালোবাজারীদের দৌড়াত্ম দেখে হতাশ হয়ে পড়েন। এ দিকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে জেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রশাসন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিলেও মুরাদনগর উপজেলা প্রশাসন ছিল নির্বিকার। এতে যাত্রীদের বেশীরভাগই হতাশা প্রকাশ করেছেন।
জানা যায়, পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপনের এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও জেলার কোম্পানীগঞ্জ বাস টার্মিনালে যাত্রী হয়রানী টিকিট কালোবাজারী, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় এখনো বন্ধ হয়নি। প্রিয়জনদের সাথে ঈদের নামাজ আদায় শেষেই মানুষ কর্মস্থলমুখী হয়ে গত কয়েকদিন যাবত এ যাত্রা অব্যাহত রাখে। কিন্তু অতিরিক্ত ভাড়ার গ্লানি যানবাহনে যাত্রীদের চাপ এড়াতে একশ্রেনীর নিন্ম আয়ের মানুষ দেরিতে কর্মস্থলে ফেরেন। এসব নিন্ম আয়ের মানুষকে জিম্মি করে এ বাস টার্মিনালে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়সহ নানাভাবে হয়রানীর অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা। বরকত উল্লাহ নামে এক ঢাকাগামী এক যাত্রী বলেন, ঈদের আগে ঢাকা থেকে তিশা পরিবহনের বাসযোগে বাড়ী আসার সময় ভাড়া ছিলো ১৮০টাকা। আর ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরার সময় বাসের টিকিট কিনছি ৩০০ টাকা দিয়ে।
ঢাকাগামী আরেক যাত্রী মেহেদী হাসান রিয়াদ বলনে, ঢাকাগামী এসি বাস গোমতী এয়ারকনের ভাড়া ছিলো ২৫০টাকা বর্তমানে ঈদের পর ৭দিন অতিবাহিত হলেও ভাড়া ৪০০টাকা আদায় করা হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক যাত্রীরা অভিযোগ করে বলেন, কোম্পানীগঞ্জ থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের পরিবহনের বাসগুলোর ভাড়া অধিক। তিশা পরিবহন ছাড়াও সিলেটগামী বিআরটিসি পরিবহন ও কুমিল্লা ট্রান্সপোর্ট বর্তমানে ভাড়া নিচ্ছেন ৪০০টাকা করে আগের ভাড়া ছিলো ৩০০টাকা। চট্রগ্রামগামী বিআরটিসির ভাড়া ছিলো ৪০০টাকা আগে ছিলো ২৫০টাকা। কক্সবাজারগামী বাসের ভাড়া ছিলো ৬০০টাকা বর্তমানে ভাড়া ৮৫০টাকা। সুখী পরিবহন, শাপলা পরিবহন,মায়ের দোয়া পরিবহনের ভাড়া ছিলো আগে ২৫০টাকা। বর্তমানে ভাড়া নিচ্ছে ৪০০টাকা করে। হানিফ পরিবহনের ভাড়া ছিলো ২৫০টাকা বর্তমানে ৪০০টাকা। এছাড়া কোম্পানীগঞ্জ থেকে কুমিল্লাগামী সুগন্ধা, জনতা ও সিএনজি চালিত অটোরিকশার ভাড়া বেড়েছে। সকল যাত্রীদের একই ভাষ্য কিছু করার নেই আমাদের কারন কর্মস্থলে পৌছাতে না পারলে চাকরী চলে যাবে তাই বাধ্য হয়েই বেশী দামে টিকিট কিনতে হলো। এদিকে টিকিট কাউন্টার গিয়ে টিকিটের মূল্য বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে একজন টিকিট বিক্রেতারা জানান, আমাদের বাস যাবার সময় যাত্রী নিয়ে যায় কিন্তু আবার ঢাকা থেকে ফেরার পথে খালি বাস ফিরে আসে তাই মালিক পক্ষের নির্দেশে টিকিটের মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে। এর বেশী কিছু তারা জানেন না বলে জানান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বাস চালক বলেন, আমরা যাত্রী নিয়ে ঢাকা যাচ্ছি আর আসার সময় যাত্রী ছাড়া ফিরে আসতে হচ্ছে। তাই যাতায়াতের খরচ হিসাব করে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়ার মাধ্যমে ।
এবিষয়ে মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিতু মরিয়মের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, যারা অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছেন যাত্রীদের কাছ থেকে তাদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।