কুমিল্লা নগরীতে যানজটের মূল কারণ অটোরিকশা
ডেস্ক রিপোর্টঃ কুমিল্লা নগরীতে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা প্রয়োজনের তুলনায় বেশি হওয়ায় প্রতিনিয়ত দুর্ভোগে পড়ছেন নগরবাসী। ঘটছে দুর্ঘটনা। যাকে নগরবাসী বলছেন অটোরিকশা আতঙ্ক। আর কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র মনিরুল হক সাক্কু বলছেন নগরীতে যানজট সৃষ্টির মূল কারণ এই ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা।
সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপ বড়ুয়া ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা মালিক সমিতির সভাপতি মো. বাবুল জানান, ২০০৭ সাল থেকে কুমিল্লা নগরীতে পল্লী বাইক (ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা) নামে যাত্রী পরিবহনটি যাত্রা শুরু করে। তখন এর পরমিাণ ছিল ৪-৫শ’টি। কুমিল্লা সিটি করপোরেশন তখন পৌরসভা ছিল। তখনকার পৌরসভা মেয়র মনিরুল হক সাক্কু তিনশ’টি পল্লী বাইককে (ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা) লাইসেন্স দিয়েছিলেন। ২০১৩ সালে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আগে মেয়র মনিরুল হক সাক্কু ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার লাইসেন্স বাতিল করেন। তখন ছিল প্রায় সাড়ে তিন হাজার। ২০১৭ সালের শেষ দিকে এসে এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার।
তবে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন, জেলা প্রশান ও অটোরিকশা মালিক সমিতি জানায় কুমিল্লা নগরীতে যাত্রী চলাচলের জন্য দেড় থেকে ২ হাজার লাইসেন্সকৃত ব্যাটারি চালিত অটোরিকশার প্রয়োজন।
সাপ্তাহিক আমোদ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক বাকীন রাব্বী বলেন, ‘সুশাসনের অভাবে কুমিল্লা মহানগরজুড়ে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার পরিমাণ বেড়েছে। নিয়ন্ত্রণহীন এই পরিবহনকে নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রশাসনের সুদৃষ্টি প্রয়োজন।’
ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা মালিক সমিতির সভাপতি মো. বাবুল বলেন, ‘আমার আওতাধীন তিনশ’টি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা রয়েছে। নগরীতে প্রয়োজনের তুলনায় সাতগুণ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা রয়েছে। এটার নিয়ন্ত্রণ আমরাও চাই। নিয়ন্ত্রণে আনতে হলে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা তৈরির কারখানা ও শো-রুম বন্ধ ঘোষণা করতে হবে।’
কুমিল্লা ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আহম্মদ নূর বলেন, ‘কুমিল্লা মহানগরজুড়ে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার পরিমাণ আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। আমরা কয়েকদিন পর পর অভিযান করে আটক ও জরিমানা করি। আমাদের অভিযান প্রতিদিনই চলছে। নগরীতে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা স্থায়ীভাবে নিয়ন্ত্রণে আনতে সিটি করপোরেশন, জেলা প্রশাসন, রাজনৈতিক নেতাকর্মী এবং মালিক সমিতি বসে সিদ্ধান্তে আসতে হবে। এছাড়া নগরীতে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা স্থায়ীভাবে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব নয়।’
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপ বড়ুয়া বলেন, যে যার ইচ্ছে মতো ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা নামে পরিবহনটি রাস্তায় নামাচ্ছে। সিটি করপোরেশনও এর নিয়ন্ত্রণ চায়।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র মনিরুল হক সাক্কু বলেন, ‘কুমিল্লা সিটি করপোরেশন হওয়ার পর থেকে আমরা কোনও ধরনের ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাকে লাইসেন্স দেইনি। নগরীতে যানজট সৃষ্টির মূল কারণ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। চাহিদার তুলনায় নগরীতে এই অবৈধ পরিবহনটি অতিরিক্ত হওয়ায় নগরবাসী রাস্তায় বের হলেই সমস্যায় পড়ছে। এই অবৈধ পরিবহনটিকে নিয়ন্ত্রণে আনতে স্থানীয় এমপি মহাদয়কে সঙ্গে নিয়ে খুব তাড়াতাড়ি বসবো। এর একটি স্থায়ী সমাধান করা হবে।’
সূত্রঃ বাংলাট্রিবিউন