নারীরা নারীই থাকুক, কেন তাদের পুরুষের মতো হতে হবে: রাইসির স্ত্রী
হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। তার এই মৃত্যুতে নতুন করে আলোচনায় স্ত্রী জামিলে আলামলহোদা। দেশটির দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর ব্যক্তির স্ত্রী হিসেবেও সাধাসিধে জীবনযাপন করেন তিনি।
ইব্রাহিম রাইসির ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে খুব কমই জানা যায়। তার স্ত্রী জামিলে আলামলহোদা তেহরানের শহিদ বেহেস্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকা এবং তাদের দুটি কন্যাসন্তান আছে। তার শ্বশুর আয়াতুল্লাহ আহমাদ আলামলহোদা। তিনিও একজন ধর্মীয় নেতা এবং মাশহাদ শহরে জুমার নামাজ পরিচালনা করেন।
জামিলে আলামলহোদা ১৯৬৫ সালে ইরানের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মাশহাদে জন্মগ্রহণ করেন। একই শহরে জন্মগ্রহণ করেন তার স্বামী রাইসিও। তেহরানের শহিদ বেহেস্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জামিলে দর্শনে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জনের পর সেখানে শিক্ষকতা করছেন। ২০০১ সালে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃত্ব ও শিক্ষাগত উন্নয়ন বিভাগের অনুষদের সদস্য হন। জামিলের ১৮ বছর বয়সে রাইসির সঙ্গে বিয়ে হয়। নারী স্বাধীনতা নিয়ে তার কিছু মন্তব্য ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি করে। গত বছর জুন মাসে ভেনেজুয়েলার রাষ্ট্রীয় টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আলামলহোদা দাবি করেছিলেন যে, ‘স্বাধীনতার নামে নারীরা আসলে কর্মক্ষেত্রসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। আমরা চাই নারীরা নারীই থাকুক। কেন আমাদের পুরুষদের মতো হতে হবে?’
গত বছর হিজাববিরোধী আন্দোলনের সময় তিনি বলেছিলেন, যেসব নারী ইরানের আইন অনুযায়ী হিজাব পরে চলাচল করবে না, তাদের অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে। তার এসব মন্তব্য গত বছর হিজাববিরোধী আন্দোলনের আগুনে ঘি ঢেলে দেয়। সাক্ষাৎকারে তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, যে নারী হিজাব পরাটা পছন্দ করেন না, তাদের ক্ষেত্রে তিনি কী মনে করেন? তার উত্তর ছিল—‘হিজাব না পরাটা নারীদের জন্য সম্মানের বাইরে।’
অন্যদিকে রাইসি দম্পতির দুই মেয়ে সম্পর্কে খুব বেশি তথ্য জানা যায় না। তাদের নাম দেশটিতে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয় না। পুরো পরিবার সম্পর্কে কঠোর গোপনীয়তা বজায় রাখা হয়। তবে দুই মেয়েই সুশিক্ষিত বলে জানা গেছে। বড় মেয়ে ইরানের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। তিনি মায়ের মতোই নারী স্বাধীনতার বিষয়ে রক্ষণশীল মানসিকতার। তার একটি সন্তানও রয়েছে। আর রাইসির ছোট মেয়ে এখনো ছাত্রী।