কুমিল্লায় মাদ্রাসা ছাত্রকে নির্মমভাবে প্রহারে রক্তাক্ত করলো শিক্ষক
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ কুমিল্লায় মাদ্রাসার ছাত্রদের সাথে দুষ্টামী করার অপরাধে সহিদুল (১২) নামের এক ছাত্রকে নির্মমভাবে প্রহার করে তার পুরো শরীর ক্ষত-বিক্ষত ও রক্তাক্ত করে দিয়েছেন শিক্ষক। আশংকাজনক অবস্থায় রোববার সকালে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর্বরোচিত ওই ঘটনা ঘটেছে জেলার দাউদকান্দি উপজেলার গৌরিপুর ইউনিয়নের লহ্মীপুর জামিয়া ইসলামিয়া মদিনাতুল উলুম মাদ্রাসায়। এ বর্বরোচিত ঘটনাটি জানাজানি হলে এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন ওই মাদ্রাসার অভিযুক্ত শিক্ষক হাফেজ আবু ইউসুফ।
মাদ্রাসা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দাউদকান্দি আটিপাড়া গ্রামের মৃত আবুল ফয়েজের পুত্র সহিদুল ইসলামকে গত ২ বছর আগে ওই মাদ্রাসার হাফেজিয়া বিভাগে ভর্তি করা হয়। সহিদুলের বিধবা মা আয়েশা বেগম ও মামা প্রবাসী মিজানুর রহমান জানান, রোববার সকালে তাদের বাড়িতে খবর আসে মাদ্রাসার ছাত্রদের সাথে দুষ্টামী করার অপরাধে শিক্ষক হাফেজ আবু ইউসুফ গত শনিবার সকালে সহিদুলকে বেত দিয়ে নির্মমভাবে প্রহার করেছেন। কিন্তু শনিবার দিন ও রাতে তার কোন চিকিৎসা না হওয়ায় সে অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। রবিবার সকাল ৯টার দিকে তাকে আমরা গৌরিপুর হাসপাতালে ভর্তি করি। ডাক্তাররা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে নেয়ার পরামর্শ দেন। পরে তাকে বিকালে কুমিল্লা নগরীর একটি প্রাইভেট হাসপাতালে এনে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নীরিক্ষা ও চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। পুরো শরীরে আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে আহত সহিদুলকে হাসপাতালের বিছানায় যন্ত্রনায় ছটফট করতে দেখা গেছে। গৌরিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: মো: জালাল হোসেন জানান, সকালে ওই আহত শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার পুরো শরীরে আঘাতের জখম রয়েছে। কিন্তু তার বমি হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢামেকে নিয়ে যাওয়ার জন্য তার পরিবার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
এদিকে বিকালে দাউদকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আল আমিন জানান, ‘বিষয়টি অত্যন্ত নিষ্ঠুরতম ও দু:খজনক, এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন থেকে সব ধরনের আইনগত সহায়তা দেয়ার বিষয়ে আহত ওই শিশুর পরিবারকে আশ^স্থ করা হয়েছে।’ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: মিজানুর রহমান জানান, হাসপাতালে শিশুটিকে ভর্তির পরই পুলিশ এ বিষয়টি জানতে পেরে অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করতে অভিযান চালায়, কিন্তু ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার কারণে সে এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে।’ এ ঘটনায় মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছেও বলেও ওসি জানিয়েছেন।