কুবি শিক্ষার্থীর অভিনব প্রতিবাদ
ডেস্ক রিপোর্টঃ ঘড়ির কাটায় তখন সকাল ১১ টা। হঠাত অভিনব দৃশ্যে চোখ আটকে গেল সবার। এক শিক্ষার্থী মুখে কালো কাপড় বেধে এবং পিঠে ‘আমি ৮ম ব্যাচ, আমি বোবা এবং বোকা’ প্ল্যার্কাড ঝুলিয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের গেইট থেকে সোজা ব্যাবসায় শিক্ষা অনুষদের দিকে হেঁটে যাচ্ছিল। কেন এমন প্রতিবাদ? সবার মনে তখন একই প্রশ্ন। এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে একদিন আগে ঘটে যাওয়া জুনিয়র শিক্ষার্থীদের হাতে সিনিয়র মারধরের শিকার হওয়ার প্রতিবাদেই এমন অভিনব পদ্ধতি বেছে নিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৩-১৪ সেশনের (৮ম ব্যাচ) শিক্ষার্থী মো. সাখাওয়াত হোসেন।
এর আগে, গত ১৪ জানুয়ারি সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের একটি হোটেলে বসাকে কেন্দ্র করে ইংরেজি ৮ম ব্যাচের (২০১৩-১৪ সেশন)শিক্ষার্থী জাহিদুল আলমের সাথে ১২ তম ব্যাচের (২০১৭-১৮ সেশন) মাহাদি হাসান অভির সাথে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এতে ছাত্রলীগ কর্মী মাহাদি আহত হয়। ঐ দিন দুপুরে বিষয়টি মিমাংসা করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের গেইটে খালেক টি স্টলের সামনে শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ ও সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম মাজেদসহ শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা দুই পক্ষকে নিয়ে বসে। এক পর্যায়ে শাখা ছাত্রলীগের ২০-২৫জন নেতাকর্মী জাহিদুলকে মারতে শুরু করে। এতে ৮ম ব্যাচের ৫ জন মারাত্বকভাবে আহত হন।। জানা যায়, যারা ৮ম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করে তারা সবাই ই বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ম, ১১তম ও ১২ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। কিন্তু অভিযুক্ত সবাই প্রভাবশালী ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মী হওয়ায় বিষয়টিকে জোরপূর্বক মিমাংসা করে দেয় বলে জানা যায়।
মূলত জুনিয়রদের দ্বারা সিনিয়র মারধর হওয়ার লজ্জাকর ও অপমানজনক কাজের জন্যই সাখাওয়াত হোসেন প্রতিবাদের এমন অভিনব পদ্ধতি বেছে নিয়েছেন বলে জানা যায়। তার এ প্রতিবাদে প্রশাসনের নজরে আসবে কি না এবং তিনি একা একা কেন প্রতিবাদ জানাচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে সাখাওয়াত হোসেন বলেন,‘আমি একজন ৮ম ব্যাচের শিক্ষার্থী। আমার ব্যাচের বন্ধুরা জুনিয়রদের হাতে মার খায় কিন্তু আমরা কোন প্রতিবাদ জানাতে পারছি না। আবার ভুক্তভোগীরা যাতে প্রশাসন বরাবর বিষয়টি না জানায় তার জন্যও তাদের উপর চাপ দেওয়া হয়েছে । শুধু যে একটি ঘটনা ঘটেছে এমন না, প্রতিনিয়তই জুনিয়রদের হাতে সিনিয়ররা মার খাচ্ছে। যেগুলোর প্রায় ঘটনাই সামান্য বিষয় নিয়ে বা কোন কারণ ছাড়াই ঘটছে। আমি আমার নিজ থেকেই নিজেকে বোবা ও বোকা ভেবে এ মৌন প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’