নাঙ্গলকোটে সন্ত্রাসী হামলায় আহত যুবকের মৃত্যু
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বাড়ীর সীমানা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে সন্ত্রাসী হামলায় গুরুতর আহত যুবক নজরুল ইসলাম সোহাগ (২২) দীর্ঘ ১০ দিন মৃত্যুর সাথে লড়াই করে অবশেষে মারা গেছেন। গত বুধবার গভীর রাতে ঢাকার লালমাটিয়া রয়েল কেয়ার সার্জিকেল হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্চা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোহাগ মারা যান। সে উপজেলার মৌকরা ইউনিয়নের মাঝিপাড়া গ্রামের আ ক ম মফিজুল ইসলামের ছেলে। তার মৃত্যুতে পরিবারের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ওই ইউনিয়নের মাঝিপাড়া গ্রামের আ ক ম মফিজুল ইসলামের সাথে একই গ্রামের মৃত আসলাম মিয়ার ছেলে আবু তাহেরের বাড়ীর সীমানা সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে গত ১০ জানুয়ারি স্থানীয়ভাবে শালিস বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গত ৭ জানুয়ারী আবু তাহের গ্রাম্য শালিসকে উপেক্ষা করে বিরোধপুর্ণ জায়গায় ঘর নির্মাণ করতে গেলে মফিজুল ইসলামের ছেলে নজরুল ইসলাম সোহাগ বাধা দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আবু তাহের ও তার স্ত্রী লায়লা বেগম, ছেলে মহি উদ্দিন রাকীব, ভাগিনা শরাফতসহ ৮/১০ জনের সন্ত্রাসী বাহিনী দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র দিয়ে নজরুল ইসলাম সোহাগের উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করে। এতে নজরুল ইসলাম সোহাগের মাথার খুলি ভেঙ্গে মোগজের ভেতর ঢুকে যায়। এসময় পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করতে গেলে তার পিতা আ ক ম মফিজুল ইসলাম ও ভাই আমিনুল ইসলাম লিটনকেও সন্ত্রাসীরা পিটিয়ে আহত করে ।
গুরুতর আহত নজরুল ইসলাম সোহাগকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার করে। পরে তাকে ঢাকার লালমাটিয়া রয়েল কেয়ার সার্জিকেল হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্চা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি করা হয়। দীর্ঘ ১০দিন আইসিইউতে মৃত্যুর সাথে লড়াই করে গত বুধবার রাতে সে মারা যায়। আ ক ম মফিজুল ইসলামের ৫ মেয়ে ৪ ছেলের মধ্যে সোহাগ ভাইদের মধ্যে সবার ছোট ছিলেন। সে স্থানীয় গোমকোট বাজারে গার্মেন্টস কাপড়ের ব্যবসা করতেন।
নিহতের পিতা আ ক ম মফিজুল ইসলাম কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমি আমার ছেলে হত্যাকারিদের উপযুক্ত বিচার দাবি করছি।
এ বিষয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার নাঙ্গলকোট থানার ওসি (তদন্ত) আশ্রাফুল ইসলাম বলেন, পুলিশ সোহাগের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে। নিহতের পিতা মফিজুল ইসলাম বাদি হয়ে প্রথমে চারজনকে আসামী করে ৩২৬ ধারায় থানায় মামলা দায়ের করেন। বর্তমানে সোহাগ মারা যাওয়ায় আগামী ২০ জানুয়ারী মামলাটিকে হত্যা মামলা হিসেবে নেয়ার জন্য আদালতে আবেদন করা হবে। আমরা আসামীদের গ্রেফতারের জন্য জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।