কুমিল্লা শহরের পানি অপসারণের খাল ভরাট করে সড়ক !
কুমিল্লা শহরের পানি অপসারণের কান্দিখাল ভরাট করে সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে। নগরীর টমছম ব্রিজ থেকে লাকসাম রোডের সড়কটি চার লেনে উন্নীত করার কাজ করতে গিয়ে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ খালটি ভরাট করতে শুরু করেছে। কিছু অংশ ভরাটের পর বর্তমানে খালটি সরু একটি ড্রেনে রূপান্তরিত হয়েছে। কুমিল্লা শহরের মূল অংশ এবং নগরীর দক্ষিণ ও পূর্ব অংশের মানুষের ব্যবহৃত বজ্র ও ময়লা পানি এই খাল দিয়ে অপসারণ করা হয়। সড়ক ও জনপথ কর্তৃক খাল ভরাটের কারণে পানি অপসারণ প্রক্রিয়া স্বাভাবিক না থাকায় কুমিল্লা শহরজুড়ে জলাবদ্ধতা প্রকট আকার ধারণ করবে। এদিকে বর্ষার মৌসুমে প্রবল বর্ষণ এবং অতিবৃষ্টির কারণে শহর ডুবে যাওয়ার আশঙ্কাও সৃষ্টি হচ্ছে। তবে সওজ এর প্রকৌশলী কাজ চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন।
শহরের পানি অপসারণের পথ বন্ধ করে সড়ক নির্মাণের ঘটনায় কুমিল্লা নগরজুড়ে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়দের তাদের দাবি, সড়ক নির্মাণের জন্য খাল ভরাট বন্ধ করা হোক। এমনকি যে অংশে মাটি ফেলানো হয়েছে, সেগুলোও অপসারণ করা হোক দ্রুত।
বুধবার (২ ডিসেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নগরীর টমছমব্রিজ থেকে কচুয়া চৌমুহনী সড়কের পাশের কান্দিখালটির সড়ক ও জনপথ বিভাগে প্রবেশ পথের কালভার্টের দুপাশে বিশাল অংশ জুড়ে ভরাট করা হয়েছে। মনগড়াভাবে মাটি দিয়ে ভরাটে খারটি সরু হয়ে গেছে। পানি অপসারণের স্রোত বন্ধ হওয়ার উপক্রম সৃষ্টি হয়েছে।
এ ব্যাপারে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র মনিরুল হক সাক্কু জানান, খাল ভরাটের কথা শুনে তিনি তার প্রকৌশলীদের পাঠিয়েছি ঘটনাস্থলে। তারা গিয়ে কাজ বন্ধ করেছেন। সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলার পর সিদ্ধান্তের আসে যে, বৃহস্পতিবার সিটি করপোরেশন এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগ যৌথভাবে সীমানা নির্ধারণ করে কাজ করবেন।
সিটি মেয়র বলেন, ‘দুঃখের বিষয় হচ্ছে, খাল ভরাট শুরুর আগে সিটি করপোরেশনের সঙ্গে সড়ক ও জনপথ বিভাগ কোনও যোগাযোগ করেনি।’
সিটি করপোরেশনের অভিযোগের বিপরীতে সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ড. মোহাম্মদ আহাদ উল্লাহ বলেন, ‘সড়ক নির্মাণে আমি আমার জায়গায় কাজ করছি। অন্যের জায়গায় আমি এক চুলও যাবো না। আর খাল ভরাট করে আমি সড়ক নির্মাণ করতে যাবো কেন? আমি আমার জায়গায় সঠিক আছি। খাল বাচাঁতে হলে সিটি করপোরেশনের উচিত যারা তাদের খাল ও জমি দখল করেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।’
এ বিষয়ে মেয়র মনিরুল হক সাক্কু বলেন, ‘যৌথভাবে সীমানা চিহ্নিত না করে খাল ভরাট করলে আমি স্থানীয় সরকার মন্ত্রাণালয়ে অভিযোগ করবো। প্রয়োজন হলে সড়কের মন্ত্রণালয়েও অভিযোগ করবো এই বিষয়ে।’