কুমিল্লা মেঘনায় বিয়ের দাওয়াতে এসে সন্ত্রাসীদের হাতে খুন হলেন নাজমা
কুমিল্লার মেঘনা উপজেলায় বিয়ের দাওয়াত খেতে এসে সন্ত্রাসীদের হাতে খুন হলেন নাজমা বেগম(৫০)। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার সন্ধায় মেঘনা উপজেলার ভাওরখোলা গ্রামে।
শনিবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে পুলিশ ও এলাকাবাসী সুত্রে জানা, ভাওরখোলা গ্রামের মৃত আক্কাছ আলী মেম্বারের ছেলে আব্দুস ছালাম(৬০) ও তাহার স্ত্রী নাজমা (৫০)সহ পরিবারে সকলে ঢাকা থেকে শুক্রবার সকালে একই গ্রামের দিলবরের মেয়ের বিয়ের দাওয়াত খেতে আসে। বিকালে বাড়ির সামনে কবির মিয়ার চায়ের দোকানে বসে ছালাম ও সিরাজ চা পান করছিল এমন সময় ওই গ্রামের ফারুক আব্বাসীর ভাই ইয়ার হোসেন, ইমরান হোসেন টিটু ও খোকন আব্বাসীসহ অজ্ঞাত কয়েকজন এসে তাদের উপর হামলা করলে ছালাম ও সিরাজ দৌড়ে বাড়ি চলে যায়। পরক্ষনেই ফারুক আব্বাসী ৫০/৬০ জনের একটি দল নিয়ে গুলি করতে করতে ছালামের বাড়ি গিয়ে ঘরের দরজা ভেঙ্গে ঘরে প্রবেশ করে ছালামকে(৬০) এলোপতারী কুপাতে থাকে এসময় স্বামীকে বাচাঁতে নাজমা এগিয়ে গেলে তাকেও এলোপতারী কুপিয়ে গুরতর আহত করে। আহতদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে মেঘনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নাজমাকে মৃত ঘোষনা করে এবং আব্দুস ছালামকে আশংঙ্কা জনক অবস্থায় ঢাকা প্রেরণ করে।
এঘটনায় আরো ৩জন আহত হয়েছে বলেও স্থানীয়রা জানায় তারা হলো ফারুক সিকদার, সাঈদ ও নুছান। এদিকে চা দোকানী কবির জানান, বিকালে সিরাজ ও ছালাম আমার দোকানে বসে চা খাইতে ছিল, এমন সময় ৩টি মোটর সাইকেল দিয়ে ফরুক আব্বাসীর ভাইসহ কয়েকজন লোক এসে সিরাজ ও ছালামকে মারধর শুরু করলে তারা কোন রকম প্রাণে বেঁচে দৌড়ে বাড়িতে চলে যায়। কিছুক্ষণ পর ফারুক আব্বাসী অনেক লোক নিয়ে গুলি করতে করতে সিরাজ ও ছালামের বাড়ির দিকে যায় তখন আমি ভয়ে দোকান বন্ধ করে চলে যাই। নিহতের ছোট বোন শিউলি বলেন, আমরা ঢাকা থেকে আসি বিয়ের দাওয়াত খেতে বিকালে ঢাকা যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম এমন সময় ফারুক আব্বাসী অনেক গুলো লোক নিয়ে গুলি করতে করতে আমাদের বাড়িতে ডুকে আমার বোনের ঘরের দরজা ভেঙ্গে ঘরে প্রবেশ করে আমার দুলাভাইকে কুপাতে থাকে তখন আমার বোন নাজমা তার স্বামীকে বাচাঁতে গেলে তাকেও এলোপাতারী কুপিয়ে হত্যা করে। শিউলি তার বোন নাজমা হত্যার দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবী করেন।
আহত আব্দুস ছালামের ছোট ভাই সিরাজ বলেন, আমিসহ ভাই ও ভাবিকে নিয়ে পরিবারে সবাই বিয়ের দাওয়াত খেতে বাড়িতে আসি, দাওয়াত খেয়ে বিকালে চায়ের দোকানে বসে চা খেতে ছিলাম এমন সময় সন্ত্রাসী ফারুক আব্বাসীর ভাইয়েরা আমাদের উপর হামলা করে বয়ে আমি দৌড়ে পালিয়ে বাড়িতে চলে যাই। পরক্ষনে ফারুক আব্বাসী গুলি করতে করতে আমাদের বাড়িতে গিয়ে ভাই ও ভাবিকে এলোপাতারী কুপিয়ে ভাবির মৃত্যু নিশ্চিত করে বীর দর্পে চলে যায়।
এ বিষয়ে আওয়ামীলীগ নেতা লিটন আব্বাসী বলেন, ফারুক আব্বাসী একজন সন্ত্রাসী তার ভয়ে আমরাসহ গ্রামের অনেক পরিবার আজ গ্রাম ছাড়া এবং তার বিরুদ্বে ৫টি হত্যা মামলাসহ ১১ মামলা রয়েছে তার পরও আজ আমার বোনকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে। অবিলম্বে খুনিদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবী জানান।
অন্যদিকে ফারুর আব্বাসী বাড়ীতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি এবং ফারুক আব্বাসীর ব্যবহারকৃত মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। মেঘনা থানার ওসি আব্দুল মজিদ হত্যা কান্ডের ঘটনা সত্যতা স্বীকার বলেন, আমরা খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কুমিল্লা মর্গে প্রেরণ করেছি এবং হত্যাকারীদের গ্রেফতার করতে পুলিশ মাঠে কাজ করছে আশা করি খুব শীগ্রই খুনিদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হবো ইনশাল্লাহ। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উক্ত ঘটনার মামলার প্রস্তুতি চলছে।