আমেরিকার কালো টম্যাটো এখন কুমিল্লায়
গাছে গাছে ঝুলছে টম্যাটো। তবে সবুজ বা লাল নয়। একদম কালো। পেকে গেলে এই টম্যাটো হয়ে যায় আরও কালো। গায়ের রং কালো হলেও এর ভেতরটা লাল। স্বাদ, ঘ্রাণ আর পুষ্ঠিগুণেও এটি অনন্য।
আমেরিকার এই ব্ল্যাক বিউটি টম্যাটো বা কালো রঙের টম্যাটো এখন চাষ হচ্ছে কুমিল্লায়। নগরীর ঠাকুরপাড়া বাগানবাড়ীর বাসিন্দা ব্যবসায়ী আহমেদ জামিলের উদ্যোগেই এমনটি সম্ভব হয়েছে।
২০১৭ সালে ছোট ভাইয়ের মাধ্যমে আমেরিকার সাউথ ক্যারোলিনা অঙ্গরাজ্য থেকে দেশে কালো টম্যাটোর বীজ আনান জামিল। পরে ওই বছরই তিনি একটি বীজতলা তৈরি করেন। তবে সে সময় শুধু একটি চারা অঙ্কুরোদগম হয়। বড় হলে সেই গাছ থেকেই অনেক বীজ পাওয়া যায়।
আহমেদ জামিলের বাগানে এখন ৬০টি কালো টম্যাটো গাছ আছে। গাছগুলোতে এখন ছোট ও মাঝারি আকারের টম্যাটো ঝুলছে।
জামিল জানান, এই ৬০টি গাছ থেকে তিনি অন্তত ৪০০ কেজি টম্যাটো পাবেন। দেশি টম্যাটোর মতোই চাষ করা যায়। খরচও খুব বেশি হয় না।
তিনি আরও জানান, ২০১৯ সালে তিনি ১০ একর জমিতে কালো টম্যাটো চাষ করেন। কিন্তু ওই বছরের ৩০ জানুয়ারি তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় তিনি ফসলের যত্ন নিতে পারেননি। তারপরই আসে করোনার ঢেউ। এমন নানা কারণেই তার কালো টম্যাটোর বিপ্লব পরিকল্পনা থেমে যায়।
আমেরিকানরা এই কালো টম্যাটো অর্নামেন্ট ফ্রুটস বললেও এর ফলন অনেক বেশি। আছে ক্যানসার-ডায়াবেটিকস রোগের প্রতিরোধ ক্ষমতাও।
বাড়তি কোনো সংরক্ষণ পদ্ধতি ছাড়াই কাঁচা টম্যাটো ১০ থেকে ১৫ দিন রেখে দেয়া যায়। ফলে সারা বিশ্বেই কালো টম্যাটোর চাহিদা বেশি। তবে চাহিদার তুলনায় উৎপাদন নেই বললেই চলে।
আহমেদ জামিল মনে করেন, দেশে যদি কালো টম্যাটো চাষ করা যায়, তাহলে রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা যাবে। তাই সরকারিভাবে কালো টম্যাটো চাষের উদ্যোগ নিলে তিনি সব রকম সহযোগিতা করতে চান।
বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) কুমিল্লার প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও প্রধান ড. মোহাম্মদ আশিকুর রহমান বলেন, ‘দেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। ফলে কৃষি বিভাগ এখন সেসব ফসল নিয়েই কাজ করছে যেগুলোর পুষ্টিমান প্রচলিত কৃষি ফসলের চেয়ে বেশি। গবেষণা চলছে কালো টম্যাটো নিয়েও। এর পুষ্টিমান যদি দেশীয় টম্যাটোর চেয়ে বেশি হয় সে ক্ষেত্রে অবশ্যই এই কালো টম্যাটো নিয়েও কাজ করা যাবে।’