তীব্র তাপপ্রবাহে কুমিল্লায় বাড়ছে ডায়রিয়ার প্রকোপ
সারাদেশের মতো কয়েকদিন ধরে কুমিল্লায়ও বইছে তীব্র তাপপ্রবাহ। অসহনীয় গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। ফলে জেলায় বাড়ছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। শিশুদের পাশাপাশি বয়স্করাও আক্রান্ত হচ্ছেন ডায়রিয়ায়।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে রোগীর সংখ্যা বেড়ে চলছে। এছাড়াও১৭ উপজেলায়ও প্রতিদিন বাড়ছে রোগীর সংখ্যা।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র মতে, মার্চ মাসে দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন ২৯১ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী, হোমনায় ২২০ জন, বুড়িচংয়ে ১৪২ জন এবং চান্দিনায় ১৩৮ জন। অন্যান্য উপজেলাতেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ডায়রিয়া রোগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে।
কুমিল্লা সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা গেছে, শিশু রোগীর চেয়ে বয়স্ক রোগীর সংখ্যাই বেশি। এসব রোগীদের স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়েছে।
ওয়ার্ডে দায়িত্বপ্রাপ্ত নার্স শারমিন আক্তার জানান, প্রতিদিনই রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বর্তমানে ওয়ার্ডে যেসব রোগী আসছে তাদের বেশিরভাগই প্রাপ্ত বয়স্ক। এছাড়া কুমিল্লা নগরীর চর্থা, ঠাকুরপাড়া, টমছমব্রিজ, নবাব বাড়ি, চকবাজার, মুগলটুলী, কাপতান বাজর ও কালিয়াজুড়ি এলাকা থেকে যে সব রোগীরা আসছেন তারা চিকিৎসা নিয়ে বাসায় চলে যাচ্ছেন। তবে সম্প্রতি ডায়রিয়ার আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
ভর্তি রোগী আমেনা বেগম বলেন, অতিরিক্ত গরমে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালের বিছানায় ভর্তি আছেন তিন দিন ধরে। শরীর এখন কিছুটা ভালো আছে। চলমান গরমে সবাইকে খাবারদাবারে সতর্ক হওয়া উচিত।
চকবাজার এলাকা থেকে আসা ডায়রিয়া আক্রান্ত তরুণী তাসফি বলেন, প্রচণ্ড গরমে শরীর খারাপ হতে শুরু করে। মাথা ঘুরে প্রথমে বমি হয়। এরপর থেকেই ডায়রিয়া শুরু। ওষুধ খেয়েও মনে হচ্ছে লাভ হয়নি। বাধ্য হয়ে হাসপাতালে এসেছি।
এ বিষয়ে কুমিল্লা জেলা সিভিল সার্জন ডা. নাছিমা আকতার বলেন, ডায়রিয়া রোগীদের জন্য সরকারি হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত চিকিৎসা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তীব্র গরমের কারণে এবং রোজা রেখে ভাজাপোড়া খাবার খাওয়ায় ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়ছে। এ ক্ষেত্রে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। ঠান্ডা জাতীয় খাবার খেতে হবে। ভাজাপোড়া পরিহার করতে হবে। ঘরের বাইরে গেলে অবশ্যই ছাতা ব্যবহার করতে হবে এবং খাবার খাওয়ার আগে সাবান পানি দিয়ে ভালোভাবে হাত ধুতে হবে।