প্রশ্নফাঁসের সব টাকা আল্লাহর রাস্তায় খরচ করেছি: আবেদ আলী
বিসিএস পরীক্ষাসহ ৩০টি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে পিএসসি চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী জীবনসহ ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সরকারি কর্মকমিশনের প্রশ্ন ফাঁসের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর এখন আলোচিত নাম চালক আবেদ আলী। একইসঙ্গে আলোচনায় এসেছে তার ছেলে উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়াম।
পিএসসির চেয়ারম্যানের সাবেক এই গাড়ি চালকের নাম প্রচারের পর সমালোচনার ঝড় ওঠে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। সৈয়দ আবেদ আলীর ব্যক্তিগত প্রোফাইল ঘেটে দেখা যায়, রাজনৈতিক, সামাজিক কর্মকাণ্ড, দান খয়রাত আর পরহেজগারির নানা খবর।
গণমাধ্যমের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে আবেদ আলীর কাছে জিজ্ঞাসা করা হয়, প্রশ্ন ফাঁসে কত টাকা ইনকাম করেছেন? জবাবে আবেদ আলী বলেন, ‘প্রশ্ন ফাঁসে যত টাকা কামাই করেছি, সব খরচ করেছি আল্লাহর রাস্তায়।’
গত ১২ জুন আবদে আলী তার ফেসবুকের এক পোস্টে লিখেন, আমার জীবনে কোনোদিন অসদুপায় অবলম্বন করিনি। গায়ে খেটে ভাগ্য পরিবর্তন করেছি।
প্রশ্নফাঁস নিয়ে গণমাধ্যমে বিভিন্ন সময় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। গতকাল রাতে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের পর সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে পিএসসির চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী ও তার ছেলেসহ ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, অভিযুক্ত পিএসসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা হলেন উপপরিচালক মো. আবু জাফর, উপপরিচালক জাহাঙ্গির আলম, সহকারী পরিচালক এস এম আলমগীর কবির, সহকারী পরিচালক নিখিল চন্দ্র রায়, চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী জীবন ও অফিস সহায়ক খলিলুর রহমান। বিপিএসসির কোনো নিয়োগ পরীক্ষা এলেই প্রশ্নফাঁস করে অর্থ লোপাটে মেতে উঠত সংঘবদ্ধ চক্রটি।
উল্লেখ্য, সৈয়দ আবেদ আলীর গ্রামের বাড়ি মাদারীপুর জেলার ডাসার উপজেলায়। সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে পাওয়া গেছে তার বিপুল সম্পদের খবর। ঢাকায় ও গ্রামে একাধিক বাড়ি, গরুর খামার ও সম্পদের তথ্য মিলেছে তারই ব্যক্তিগত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
সাবেক পিএসসি চেয়ারম্যানের এই গাড়িচালকের নিজের একটি ডুপ্লেক্স বাড়িসহ কুয়াটায় একটি থ্রিস্টার মানের হোটেল রয়েছে। এ হোটেল সম্পর্কে তার ফেসবুক প্রোফাইলে এক পোস্টে তিনি লিখেন, ‘আমাদের নতুন হোটেল এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলাম আজ। হোটেল সান মেরিনা, কুয়াকাটা। সমুদ্রকন্যার পাড়ে আজীবন নিজের জন্য একটা থাকার ব্যবস্থা।’ যদিও ব্যবসা-বাণিজ্যের মাধ্যমে বিত্তবৈভব বানিয়েছেন বলে দাবি করেছেন তিনি।
সর্বশেষ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনের জন্য প্রচারণা চালিয়েছিলেন আবেদ আলী। আবেদ আলী সমাজের বিত্তবান ও প্রভাবশালীদের সঙ্গে নিয়মিত চলাফেরা করতেন। প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিদের সঙ্গেও উঠবস করতেন।
ছেলে সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়াম। জানা গেছে, ছাত্রলীগের ডাসার উপজেলা কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সহ-সভাপতি ছিলেন তার ছেলে সোহানুর । এছাড়াও বর্তমানে ঢাকা উত্তর শাখা ছাত্রলীগের ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক সেক্রেটারি তিনি। ফেসবুকে তাকে নানান সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত দেখা যায়। সেই সাথে বিলাসবহুল জীবনযাপন করছেন বলে দেখা যায়।