শহিদ মিনার থেকে সরকার পদত্যাগের এক দফা দাবি ঘোষণা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মো. নাহিদ ইসলাম ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে সরকার পদত্যাগের এক দফা দাবি ঘোষণা করেছেন।
শনিবার (৩ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে শহীদ মিনারে সমবেত ছাত্র-জনতার উদ্দেশে বক্তব্য দেন নাহিদ। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার মন্ত্রিসভাকে পদত্যাগ করতে হবে।
এ সময় আগামীকাল রোববার (৪ আগস্ট) থেকে সারা দেশে অসহযোগ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, গত ১৯ জুলাই আমরা কারফিউ ভঙ্গ করে শাটডাউন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছিলাম। সে বক্তব্য কোনো মিডিয়ায় প্রচার করতে দেয়া হয়নি। সে রাতে আমাকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মম অত্যাচার করা হয় এ ঘোষণার জন্য এবং আন্দোলন প্রত্যাহার ও সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসার জন্য জবরদস্তি করা হয়।
ছাত্রজনতা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছিল। সরকার দমন-পীড়ন করে সেটিকে সংঘাত ও সহিংসতার দিকে ঠেলে দিয়েছে। কারফিউ ও ইন্টারনেট বন্ধ করে শত শত মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। এবার এরকম পরিস্থিতি হলে কারো জন্যই পরিণতি ভালো হবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন নাহিদ ইসলাম।
তিনি আরও বলেন, পরবর্তীতে ডিবি অফিস থেকেও আমাদের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। আমাদের অনশন ও রাজপথে আন্দোলনের কারণে সে পরিকল্পনা সফল হয়নি। আমরা এখনো শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের আন্দোলন অব্যাহত রাখতে চাই। আমরা কোনো সহিংসতা, প্রতিহিংসা ও প্রাণনাশ চাই না৷ নিরাপত্তা বাহিনীকেও এরজন্য সহযোগিতা করতে হবে। আওয়ামী সন্ত্রাসীদের রাজপথে দেখা গেলে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে এর দায়ভার নিতে হবে। তবে রক্ত ঝরলে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। আমরা ন্যায়বিচার ও জীবনের নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা করতে চাই।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম এ সমন্বয়ক বলেন, গণজোয়ার তৈরি হয়েছে। কোনো ধরনের দমন-পীড়ন, প্রোপাগাণ্ডা ও ষড়যন্ত্র করে এ আন্দোলন থামানো যাবে না।
তিনি বলেন, জরুরি অবস্থা বা কারফিউ ছাত্র-নাগরিক মেনে নিবে না। শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি চাইলে গুলি ও হামলা করার নির্দেশ বন্ধ করতে হবে। অসহযোগ আন্দোলনের নির্দেশনা অনুযায়ী চলতে হবে। খুনি সরকারের কাছে বিচার চাওয়া বা সংলাপে বসারও সুযোগ আর নেই। ক্ষমা চাওয়ার সময়ও পার হয়ে গেছে। যখন সময় ছিল তখন সরকার ব্লক রেইড দিয়ে শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার করেছে, নির্যাতন করেছে। আখতার হোসেন, আরিফ সোহেলসহ রাজবন্দীদের কারাগারে রেখে আমরা কোনো ধরনের সমঝোতায় যাবো না।
নাহিদ নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতি আহ্বান থাকবে খুনি সরকারকে সমর্থন না দিয়ে ছাত্র-নাগরিকের পাশে থাকুন। সরকার জনগণের বিপক্ষে দাঁড়ালে সেই সরকারের হুকুম শুনতে আপনারা আর বাধ্য নন। ছাত্রদের সঙ্গে মিছিলে যোগ দিন। আমরা পুলিশ নয়, হুকুমের আসামিকে কাঠগড়ায় দাঁড়া করাতে চাই।
নিরাপত্তা বাহিনীকে মিছিলে যোগদানের আহ্বান জানিয়ে এ সমন্বয়ক সবাই শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ ও আগামীকাল রোববার (৪ আগস্ট) থেকে অসহযোগ কর্মসূচি সফল করার আহ্বান জানান।