ভারত থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা করল মনিপুর!
ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন মনিপুর রাজ্যের দুই বিদ্রোহী নেতা। গত মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যে এ ঘোষণা দেয়ার পাশাপাশি তারা প্রবাসী সরকার গঠনের ঘোষণা দেন।
ওই দুই নেতা দাবি করেন, তাদের এ ঘোষণা রাজা লেইশেম্বা সানাজাওবার পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার খবরে বলা হয়, লন্ডনে বসবাসরত দুই মনিপুরী নেতা ইয়ামবিন বিরেন ও নরেংবাম সমরজিৎ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে ‘প্রবাসী মনিপুর সরকার’ গঠনের ঘোষণা দেন।
বিরেন নিজেকে মনিপুর স্টেট কাউন্সিলের মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন। আর সমরজিৎ দাবি করেন, তিনি নবগঠিত সরকারের পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রী।
এ বিষয়ে এখনো যুক্তরাজ্যে ভারতীয় হাইকমিশন থেকে কিংবা ভারত সরকারের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। মুখ খোলেননি মনিপুরী রাজাও।
নরেংবাম সমরজিৎ বলেন, তারা জাতিসংঘে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির জন্য চেষ্টা চালাবেন।
তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন দেশের কাছে স্বাধীনতার স্বীকৃতি চাইব… জাতিসংঘের সদস্য হওয়ার জন্য। আমরা আশা করছি, অনেক দেশ আমাদের স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দেবে।
মনিপুর ভারতের সবচেয়ে ছোট রাজ্যগুলোর একটি।
এর জনসংখ্যা প্রায় ২৮ লাখ। ১৯৪৭ সালে যুক্তরাজ্যের কাছ থেকে ভারতের স্বাধীনতা লাভের সময় মনিপুর ছিল প্রিন্সলি স্টেট বা রাজা শাসিত স্বতন্ত্র অঞ্চল। এর দুই বছরের মাথায় ১৯৪৯ সালে অঞ্চলটি ভারতের নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে তখন থেকেই স্বাধীনতার দাবিতে সেখানে আন্দোলন চলছে। দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার ‘প্রবাসী মনিপুর সরকার’ গঠনের ঘোষণা আসে।
রাজ্যটিতে স্বাধীনতার দাবিতে কয়েক দশক ধরে লড়াই করছে শতাধিক সশস্ত্র গোষ্ঠী। তারা বিভিন্ন মাত্রায় স্বায়ত্তশাসন দাবি করে আসছে। স্বাধীনতাকামীদের সঙ্গে ভারতীয় সেনাবাহিনীর লড়াইজনিত সহিংসতা মনিপুরের বাসিন্দাদের প্রাত্যহিক জীবনের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নাগা, কুকি, পাঙ্গালসহ নানা নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর বাস এই রাজ্যে। এসব গোষ্ঠী নিজেদের সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখতে চায়।