কুমিল্লার বন্যাদুর্গত ৪০০ পরিবারের মাঝে রামরুর খাদ্য ও স্বাস্থ্য-সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ
সাম্প্রতিক বন্যায় কর্ম এলাকার বন্যা দুর্গত মানুষের দুর্ভোগ মোকাবেলার অংশ হিসেবে হেলভেটাস বাংলাদেশ এবং সুইস এজেন্সি ফর ডেভেলপমেন্ট এন্ড কোঅপারেশন (এসডিসি) এর সহায়তায় কুমিল্লার বন্যা দুর্গত ৪০০ মানুষের মাঝে খাদ্য ও স্বাস্থ্য-সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ করেছে রেফিউজি এন্ড মাইগ্রেটরী মুভমেন্টস্ রিসার্চ ইউনিট (রামরু) এর স্ট্রেনদেনড অ্যান্ড ইনফরমেটিভ মাইগ্রেশন সিস্টেমস (সিমস) প্রকল্প।
বন্যাপীড়িত মানুষের দুর্দশা হ্রাস করতে কুমিল্লার মুরাদনগর ও কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলায় ৪০০ পরিবারের হাতে এক সপ্তাহের খাদ্য এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী তুলে দিয়েছে প্রকল্পটি। উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় মুরাদনগরের মুরাদনগর সদর, ধামঘর ও নবীপুর পশ্চিম ইউনিয়নে ও কুমিল্লা সদর দক্ষিণের চৌয়ারা, বারোপাড়া ও বিজয়পুর ইউনিয়নের বন্যা দুর্গত পরিবারের মাঝে গত ২২, ২৪ ও ২৫ সেপ্টেম্বর দিনব্যাপী এসব সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
উক্ত বিতরন কর্মসূচীতে উপস্থিত ছিলেন জনাব মোঃ আমিরুল কায়ছার, জেলা প্রশাসক, কুমিল্লা; মোহাম্মদ কাবিরুল ইসলাম খান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), কুমিল্লা; রুবাইয়া খানম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ; মোঃ মিজানুর রহমান, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ; মোহাম্মদ আব্দুল হাই খান, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা, মুরাদনগর, মোহাম্মদ কাওসার আল মামুন, উপসহকারী প্রকৌশলী, বিএডিসি, মুরাদনগর এবং পুলিশ প্রশাসন প্রতিনিধিসহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, প্যানেল চেয়ারম্যান, সচিব, মেম্বারবৃন্দ ও বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ।
এতে আরো উপস্থিত ছিলেন সিমস প্রকল্পের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ ইনজামুল হক, জেলা সমন্বয়ক শান্তা সূত্রধর ও রামরুর অন্যান্য কর্মকর্তা বৃন্দ।
জেলা প্রশাসক মোঃ আমিরুল কায়ছার বন্যা দুর্গতদের উদ্দেশ্যে তার বক্তব্যে বলেন, ” আমরা আসলে এটাকে ত্রাণ দিচ্ছি বলব না আমরা মুলত আপনাদের পাশে দাড়াচ্ছি। আমাদের সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই দুর্যোগ কাটিয়ে উঠতে হবে। দুর্যোগ মোকাবেলায় সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন সংস্থার উদ্যোগ অত্যন্ত প্রশংসনীয়। রামরুর এই উদ্যোগ বন্যাকবলিত পরিবারের জন্য যথাযথ সহায়তা প্রদান করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে আপনাদের পাশে আমরা সবসময় আছি এবং থাকবো।” এতে তিনি দুর্যোগ পরবর্তী ত্রাণ কার্যক্রমের গুরুত্ব এবং সরকার ও বিভিন্ন সংগঠনের যৌথ প্রচেষ্টার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন।
মূলত সামাজিক দায়িত্ববোধের অংশ হিসেবেই কর্ম এলাকার বিভিন্ন উপজেলায় এ খাদ্য ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে রামরু। খাদ্য ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী হাতে পাওয়ার পর চৌয়রা ইউনিয়নের দীঘল গাও এর একজন বাসিন্দা বলেন, বন্যায় আমার থাকার ঘরটা ভেঙে গেছে । আমি বৃদ্ধা অসহায় মানুষ, বন্যার পর সংসার চালাতে খুব কষ্ট হচ্ছে। আপনাদের এই খাদ্য সামগ্রী পেয়ে আমি খুব খুশি। অন্তত এক সপ্তাহ পেট ভোরে দু মুঠো খেতে পারব। ধানঘর ইউনিয়নের ভুবনঘরের আরেকজন বলেন, বন্যায় ঘরবাড়ি পানির নীচে চলে গেছে। আমরা দিন আনি দিন খাওয়া মানুষ, বন্যার পর সংসার চালাতে খুব কষ্ট হচ্ছে। আপনাদের এই খাদ্য সামগ্রী পেয়ে আমি ও আমরা অনেক উপকৃত হলাম। রামরুকে অনেক ধন্যবাদ।
উল্লেখ্য যে, কুমিল্লা জেলার আদর্শ সদর, সদর দক্ষিণ, চান্দিনা, মুরাদনগর ও দাউদকান্দি উপজেলার ২৫টি ইউনিয়নে এসডিসি এবং হেলভেটাস বাংলাদেশ এর সহযোগিতায় রামরু তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে সিমস প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য হলো নিরাপদ অভিবাসন, অভিবাসী এবং তাদের পরিবারকে আইনি সহায়তা প্রদান, আর্থিক স্বাক্ষরতা ও উদ্যোক্তা তৈরির প্রশিক্ষণ প্রাপ্তিতে সহায়তা করার মাধ্যমে তথ্যবহুল ও নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করা। পাশাপাশি অভিবাসনে সুব্যবস্থাপনা আনার জন্য জাতীয় পর্যায়ে সকল অংশীজনদের সম্পৃক্ত করে কাজ করছে রামরু।