কুমিল্লায় গর্ত ও খাল থেকে পৃথক দুই বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার

গর্ত ও খাল থেকে পৃথক ঘটনায় ২ বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। কুমিল্লার দেবিদ্বারে চা খেতে বেড়িয়ে যাওয়ার ২ দিন পর বুধবার (১৩ নভেম্বর) সকাল ৬টায় বাড়ির পাশের গর্তে মিলল সহিদুল্লাহ সরকার (৬০) নামে এক বৃদ্ধার মরদেহ।

অপর ঘটনায় বাড়ি থেকে বের হয়ে যাওয়ার এক দিন পর সকাল ১১ টায় দেবিদ্বার উপজেলার ইউছুফপুর গ্রামের কাউয়ারা ব্রিজের নিচে খালে মিলল মিজানুর রহমান(৬৬) নামে অপর এক বৃদ্ধের মরদেহ। পুলিশ উভয় ঘটনায় নিহত দুই ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে থানায় অপমৃত্যু মামলা দায়ের পূর্বক ময়না তদন্তের জন্য কুমেক হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।

নিহত বৃদ্ধ সহিদুল্লাহ সরকার(৬০) দেবিদ্বার পৌর এলাকার বারেরা হেলাল গাজী সরকার বাড়ির মৃত জব্বার আলী সরকারের পুত্র। তিনি পেশায় পানির কলের মিকানিক্স ছিলেন। অপর ঘটনায় নিহত মিজানুর রহমান (৬৬) মুরাদনগর উপজেলার হীরাপুর গ্রামের মৃত মতিউর রহমানের পুত্র।

মৃত সহিদুল্লাহ সরকারের পরিবারের লোকজন ও প্রতিবেশীরা জানান, সহিদুল্লাহ সরকার গত সোমবার (১১ নভেম্বর) সন্ধ্যার পর নাস্তা খেয়ে নবার বাড়ি নজরুলের চা দোকানে চা খেতে ও আড্ডা দিতে যান। গায়ে জ্বর থাকায় রাত ১০টায় ওখানে তিনি মাথা ঘুরে পড়ে যান। স্থানীয়রা মাথায় পানি ঢেলে প্রাথমিক সেবা দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। বাড়িতে রাত ১০ টার পরও না ফেরায় তার পুত্র বধূ বিলকিস আক্তার খুঁজতে থাকেন। পরদিন মঙ্গলবার ১২ নভেমম্বর সারাদিন আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশীদের সাথে নিয়ে খুঁজা-খোজি করে কোথাও তার সন্ধান পাননি।

বুধবার (১৩ নভেম্বর) ভোর ৬টায় সরকার বাড়ির আলীম সরকারের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার গর্তে একটি পলিথিন ভাসতে দেখেন, পলিথিনের ভেতরে কিছু একটা আছে সন্দেহে তার স্বামী আলীম সরকারকে ডেকে আনেন। আলীম সরকার বাঁশ দিয়ে পলিথিনটি সরিয়ে দেখেন মানুষের মরদেহ। তার সূর চিৎকারে স্থানীয়রা এসে সহিদুল্লাহ সরকারের মরদেহ উদ্ধার করেন। মৃত জব্বার আলী সরকারের ১ পুত্র ও ২ কন্যা সন্তানের জনক। একমাত্র পুত্র কাদের সরকার প্রবাসে, ২ কন্যার বিয়ে হয়ে গেছে। স্ত্রী প্রায় ৪ বছর পূর্বে মারা গেছেন। একমাত্র পুত্রবধূ ও নাতি-নাতনি নিয়ে সহিদুল্লাহ সরকার বাড়িতে থাকতেন।

অপর ঘটনায় নিহত মিজানুর রহমানের ভাই মো. বিল্লাল হোসেন ও আলাউদ্দিন জানান, তাদের ভাই মানসিক ভারসাম্য ছিলেন, মঙ্গলবার বিকেলে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি। বুধবার দুপুরে ইউছুফপুর কাউয়ারা ব্রিজের নিচে একজন বৃদ্ধের লাশ পাওয়ার সংবাদে এসে তাদের ভাইকে শনাক্ত করেন।

তারা আরো জানান, মৃত মিজানুর রহমানের পরিবার ঢাকায় থাকেন, তিনি বাড়িতে একাই থাকতেন। স্থানীয়দের কাছ থেকে তারা জানতে পারেন, ব্রিজের রেলিং না থাকায় মঙ্গলবার দিবাগত রাত অনুমান সাড়ে ১২ টায় খালের উপর কিছু একটা পড়ার শব্দ পেলেও স্থানীয়রা কেউ ঘটনাস্থলে আসেননি।

এ ব্যাপারে দেবিদ্বার থানার ওসি (তদন্ত) জানান, পুকুরে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার হওয়া লাশ এবং কাউয়ারা ব্রিজের নিচে খালে পাওয়া বৃদ্ধের পরিচয় পাওয়া গেছে। উভয়ের মৃত্যুর বিষয়ে নিয়ে পরিবারের কোন অভিযোগ না থাকলেও কিছু সিমটম সন্দেহ জনক পাওয়ায় ময়না তদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছি। তবে ওই ঘটনায় দেবিদ্বার থানায় পৃথক দু’টি ইউডি মামলা দায়ের হয়েছে।

আরো পড়ুন