আবু সাঈদের ভাবিকে ভুল চিকিৎসা, দুই ভাইয়ের সঙ্গে অসদাচরণ
বেসরকারি ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসার কারণে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ আবু সাঈদের মামাতো ভাইয়ের স্ত্রী আমেনা জীবন সঙ্কটাপন্ন হয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় আবু সাঈদের বড় দুই ভাইয়ের সঙ্গে খারাপ আচরণেরও অভিযোগ উঠেছে ক্লিনিকের মালিকের বিরুদ্ধে। সোমবার (১৮ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে রংপুর নগরীর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় অবস্থিত জনসেবা ক্লিনিকে ঘটনাটি ঘটেছে।
অভিযোগে জানা গেছে, আবু সাঈদের মামাতো ভাই সাজু মিয়া তার স্ত্রী আমেনা বেগমকে ৩৫ দিন আগে জনসেবা ক্লিনিকে ভর্তি করে। তাদের বাড়ি পীরগঞ্জ উপজেলার বড় ফলিয়া কাজী পাড়া গ্রামে। সেখানে তার জরায়ুর টিউমার অপারেশন করা হয়। কিন্তু অপারেশনের পর তাকে চারটি ট্যাবলেট ছাড়া আর কোনও ওষুধ দেওয়া হয়নি। এমনকি ক্লিনিকের কোনও চিকিৎসকও রোগী দেখতেও আসে না বলে স্বজনদের অভিযোগ।
বিষয়টি জানার পর সোমবার সন্ধ্যার দিকে আবু সাঈদের দুই বড় ভাই রমজান আলী ও আবু হোসেন তাদের মামাতো ভাইয়ের স্ত্রীকে দেখতে ওই ক্লিনিকে যান। সেখানে জানতে পারেন, ক্লিনিকের মালিক ডা. মোসাদ্দেকুল ইসলামের ভুল চিকিৎসার শিকার হয়েছেন তিনি। তার জরায়ুর অপারেশন করার পর মূত্রথলিতে প্রস্রাব আটকে রাখতে পারছে না।
এমন অবস্থায় আরও সমস্যা দেখা দেওয়ায় বিষয়টি জানতে ওই ক্লিনিকের ডা. আমিনুল ইসলামের সঙ্গে দেখা করতে গেলে তাদের সঙ্গে চরম খারাপ ব্যবহার করা হয়। এমনকি তাদের চেম্বার থেকে বের করে দেওয়া হয়।
বিষয়টি জানাজানি হলে তোলপাড় শুরু হয়। খবর পেয়ে মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানার ওসি আতাউর রহমানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ আসে ক্লিনিকে।
এ বিষয়ে আবু সাঈদের বড় দুই ভাই রমজান আলী ও আবু হোসেন জানান, ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের ভুল চিকিৎসা ও অপারেশনের কারণে তাদের ভাবির অবস্থা সংকটাপন্ন হয়েছে। তারা এ ঘটনার বিচার দাবি করেছেন। সেই সঙ্গে ভাবির কিছু হলে এর দায় ক্লিনিক কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে বলেও জানান তারা।
এ বিষয়ে ক্লিনিকে মালিকের ছেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি। এমনকি তিনি তার নামও বলতে রাজি হননি। তবে এক পর্যায়ে বলেছেন ক্লিনিকের মালিক ডা. মোসাদ্দেকুল ইসলাম তার বাবা, তিনি নিজেও চিকিৎসক। বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত আছেন। এখানে বসে রোগী দেখেন। এক পর্যায়ে বলেন, নো কমেন্ট।
অন্যদিকে রংপুর মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানার ওসি আতাউর রহমান জানান, ভুল চিকিৎসার কারণে একজন রোগী সংকটাপন্ন বলে খবর পেয়ে এখানে এসেছেন। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।