রাজনৈতিক বিরোধ নয়, অশ্লীল ভিডিও ধারণ নিয়ে দ্বন্দ্বে ছাত্রলীগের ২ নেতাকর্মী খুন
চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলায় বিজয় দিবসের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দুই শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামি শাহীন রেজাসহ আরও দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। ঢাকার সাভার ও ময়মনসিংহে অভিযান চালিয়ে গত শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ রোববার (১২ জানুয়ারি) সকালে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার রেজাউল করিম।
তিনি বলেন, ভিডিও ধারণকে কেন্দ্র করে মল্লিকপুর ও খোলসী গ্রামের মধ্যে বিরোধ বাড়ছিল। এর জেরে জোড়া খুনের ঘটনায় প্রধান আসামিসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রধান আসামির তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধারালো ছুরি উদ্ধার করেছে পুলিশ। সে নিজের দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
পুলিশ সুপার জানান, হত্যাকাণ্ডের কারণ কোনো রাজনৈতিক বিরোধ নয়। স্থানীয় পেয়ারাবাগানে অশ্লীল ভিডিও ধারণকে কেন্দ্র করে মল্লিকপুর ও খোলসী গ্রামের মধ্যে বিরোধের জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- প্রধান আসামি মল্লিকপুর গ্রামের শাহীন রেজা (২২) এবং সামাদ আলী (৩০)। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এর আগে, গত ১৭ ডিসেম্বর রাতে নাচোল উপজেলার মল্লিকপুরে ছুরিকাঘাতে প্রাণ হারান খোলসী গ্রামের এজাবুল হকের ছেলে মাসুদ রানা ও চাঁদপাড়ার আবদুর রহিমের ছেলে রায়হান আলী। এতে আহত হন আরও চারজন। এ ঘটনায় ১৮ ডিসেম্বর মাসুদের বাবা বাদী হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত সাত-আটজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। রাতেই মল্লিকপুর গ্রামের আজিজুল ও তাসিমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, নিহত মাসুদ রানা নাচোল উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ছিলেন। তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। নিহত দুইজন নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মী দাবি করে রক্তের শপথ নেয়ার ঘোষণা করছিল সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সংসদ। গত ১৯ ডিসেম্বর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ছাত্রলীগের চাঁপাইনবাবগঞ্জ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ইলেকট্রনিক বিভাগের সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা এবং নাচোল উপজেলা শাখান কর্মী রায়হান গতকাল রাতে নাচোল উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের মল্লিকপুর বাজারে নির্মমভাবে মৃত্যুবরণ করেছে।