‘হান্নানের সঙ্গে থাকা আ.লীগের লোকজন বিএনপির ওপর হামলা করে’

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদের সঙ্গে থাকা আওয়ামী লীগের লোকজন প্রথমে বিএনপির ওপর হামলা করে বলে দাবি করেছেন নোয়াখালী জেলা যুবদলের সহ ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক রাকিব উদ্দিন।
সোমবার (২৪ মার্চ) রাতে হাতিয়ার জাহাজমারা বাজারে তাৎক্ষণিক এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রাকিব উদ্দিন বলেন, উপজেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক আব্দুর রবের ওপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে জাহাজমারা বাজারে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করে। আমাদের মিছিল জাহাজমারা বড় মসজিদের সামনে গেলে হান্নান মাসউদের সঙ্গে থাকা আওয়ামী লীগের লোকজন প্রথমে বিএনপির ওপর হামলা করে। এর মধ্যে জাহাজমারা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল ইসলাম মালোশিয়ার বাহিনী ও তার ছেলে বাপ্পী লোকজন এনে আমাদের ওপর হামলা করেছে।
রাকিব উদ্দিন আরও বলেন, হান্নান মাসউদের পাশে থেকে আমাদের ওপর হামলার ডকুমেন্টস আমাদের কাছে আছে। আমরা যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়েছি। এতে আমাদের ৩০ জন লোকের ওপর হামলা করেছে তারা হাসপাতালে আছে। হামলায় যুবলীগ, ছাত্রলীগ ছিল। তারা হান্নানের পাশে ছিল। যার ডকুমেন্টস আমাদের কাছে আছে। তারপর আমরা দুই ঘণ্টা হান্নানের সঙ্গে বৈঠক করেছি, বলেছি আপনি প্রোগ্রাম করে চলে যান। কিন্তু সে কথা না শুনে সোনাদিয়া বুড়িরচর থেকে অস্ত্রসহ লোক এনে হামলা করিয়েছে।
এদিকে হাতিয়া উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মো. ইসমাইল হোসেন ইলিয়াস বলেন, ‘হান্নান মাসউদ আওয়ামী লীগের এজেন্ডা নিয়ে বিএনপির বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছে। জাহাজমারা ইউনিয়ন ৫৫ হাজার ভোটারের এলাকা। এর মধ্যে প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ বিএনপি করে। হান্নান মাসউদ বিএনপির বিরুদ্ধে বক্তব্য দেওয়ার মাধ্যমে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে। তার সঙ্গে আওয়ামী লীগের লোকজন রয়েছে। এর মধ্যে জাহাজমারা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল ইসলাম মালোশিয়া ও বুড়িরচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান কল্লোল ও নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেহেরাজের লোকজন ছিল। বর্তমানে আমরা সবাইকে শান্ত থাকতে বলেছি।’
এবিষয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হাতিয়া উপজেলার সমন্বয়ক ইউসুফ রেজা বলেন, ‘হান্নান মাসউদ ভাইয়ের শান্তিপূর্ণ গণসংযোগে বিএনপির নেতাকর্মীরা হামলা করে। ফলে থমথমে পরিবেশ তৈরি হয়। কোথাও আওয়ামী লীগের কেউ ছিল না। হান্নান ভাই বর্তমানে জাহাজমারা বাজার থেকে উপজেলা শহরের ধানসিঁড়ি রিসোর্টের সামনে অবস্থান করছেন। অপরাধীদের গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত এই অবস্থান কর্মসূচি চলবে।’
এদিকে আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছি। ছাত্র জনতা মাথা নোয়াবার নয়। আমি কারও এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য মাঠে নামিনি। অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য নেমেছি। আমরা এসব ভয় পাই না। আমাদের মেরে ফেলুক, তবুও আমরা আপস করবো না। আসামিদের গ্রেপ্তারের আগ পর্যন্ত আমরা মাঠ ছাড়বো না।
হামলার বিষয়ে আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেন, “আমরা মানুষের সঙ্গে কথা বলছিলাম। এমন সময় বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত কয়েকজন মিছিল নিয়ে আমাদের মিটিংয়ে ঢুকে যায়। তারা আমাদের লোকজনের ওপর হামলা চালায়। এতে আমাদের কয়েকজন আহত হয়েছেন। মূলত আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করেছে বিএনপির সন্ত্রাসীরা। হামলার সঙ্গে জড়িত চিহ্নিত চাঁদাবাজদের আইনের আওতায় আনার দাবিতে আমরা অবস্থান নিয়েছি।”
হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম আজমল হুদা বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে ছিলাম। রাত ২টা ৫৫ মিনিটে আব্দুল হান্নান মাসউদ তার সঙ্গে থাকা লোকজন নিয়ে ওছখালী ধানসিঁড়ি রিসোর্টের সামনে অবস্থান করছেন। বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য বাড়ানো হয়েছে।