ইরানে মার্কিন হামলার পর হরমুজ প্রণালী থেকে ২ সুপারট্যাঙ্কার ইউটার্ন

ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলার পর নিরাপত্তা শঙ্কায় হরমুজ প্রণালী থেকে দুটি সুপারট্যাঙ্কার ইউটার্ন নিয়েছে। ইকোনোমিক টাইমস ও ব্লুমবার্গের তথ্য অনুযায়ী, ‘Coswisdom Lake’ ও ‘South Loyalty’ নামের দুটি বিশাল তেলবাহী জাহাজ রবিবার হরমুজ প্রণালীতে প্রবেশের পরপরই তাদের রুট পরিবর্তন করে দক্ষিণের দিকে ফিরে যায়।
এই দুটি ট্যাঙ্কার প্রতিটি প্রায় ২০ লাখ ব্যারেল তেল বহনে সক্ষম। হরমুজ প্রণালী দিয়ে প্রতিদিন গড়ে বিশ্বে রপ্তানি হওয়া তেলের প্রায় ২০ শতাংশ পণ্য পরিবাহিত হয়। ফলে এই গুরুত্বপূর্ণ নৌপথে ট্যাঙ্কারের গন্তব্য পরিবর্তন আন্তর্জাতিক বাজারে উদ্বেগের বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরান-যুক্তরাষ্ট্র উত্তেজনার কারণে হরমুজ প্রণালীতে নিরাপত্তা পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল হয়ে উঠেছে। সম্ভাব্য সামরিক সংঘাত, ইলেকট্রনিক জ্যামিং, ড্রোন হুমকি ও সমুদ্র খনিতে বিস্ফোরণের শঙ্কায় জাহাজগুলো ঝুঁকি না নিয়ে ফিরে গেছে।
বিশ্ববাজারে ইতোমধ্যে এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। তেলের দাম ৫ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। ডব্লিউটিআই ও ব্রেন্ট উভয় তেলের মূল্য গড়ে ৫–৬ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। ইনশুরেন্স কোম্পানিগুলো নৌপথে তেল পরিবহনে প্রিমিয়াম বাড়াতে শুরু করেছে।
বিশ্বজুড়ে জ্বালানি সরবরাহব্যবস্থায় এই ধরনের অস্থিরতা বাড়তে থাকলে তেলের দাম ১০০ ডলারের ঘর পেরিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিশ্বনেতারা হরমুজ প্রণালী খোলা রাখার জন্য কূটনৈতিক চাপ বাড়াচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্র চীনসহ অন্যান্য বৃহৎ অর্থনীতির দেশগুলোকে আহ্বান জানিয়েছে—ইরান যেন এই গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্রপথ বন্ধ না করে।
বিশ্লেষকদের মতে, দুটি সুপারট্যাঙ্কারের ইউটার্ন এই সংকটের প্রথম বড় প্রতিক্রিয়া হলেও, পরবর্তী দিনগুলোতে যদি পরিস্থিতির উন্নতি না হয়, তাহলে বিশ্ব জ্বালানি সরবরাহব্যবস্থা আরও বড় ধাক্কা খেতে পারে।