কুমিল্লায় ১৪দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে আন্তর্জাতিক কর্মশালার উদ্বোধন

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ আফ্রিকান এশিয়ান রুরাল ডেভেলপমেন্ট অরগানাইজেশন (আর্ডো) ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ উদ্যোগে “টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জন: আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও গ্রামীণ রুপান্তর” শীর্ষক আন্তর্জাতিক কর্মশালা শুরু হয়েছে।

শনিবার কুমিল্লা বার্ডে ১২দিন ব্যাপী এ কর্মশালার উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয়।

আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণ কর্মশালাটিতে আফ্রিকা ও এশিয়া মহাদেশের চীন, মিশর, ঘানা, ভারত, জর্ডান, কোরিয়া, ওমান, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান, ফিলিস্তিন, শ্রীলংকা, সুদান এবং বাংলাদেশসহ ১৪টি দেশের ২২ জন নীতি-নির্ধারক ও সরকারি কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বার্ডের মহাপরিচালক ড. এম. মিজানুর রহমান এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগহিসেবে বক্তব্য রাখেন মিস মাফরূহা সুলতানা,  গেস্ট অব অনার হিসেবে বক্তব্য রাখেন আফ্রিকান এশিয়ান রুরাল ডেভেলপমেন্ট অরগানাইজেশনের সেক্রেটারী জেনারেল ড. মনোজ নরডিওসিংহ।

১২দিনব্যাপী এই কর্মশালাটির উদ্দেশ্য হচ্ছে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনকে সামনে রেখে আফ্রিকান এশিয়ান রুরাল ডেভেলপমেন্ট অরগানাইজাশন (আর্ডো) এর সদস্য রাষ্ট্রসমূহের নীতি-নির্ধারক ও আর্থিক সেবা প্রদানকারী কর্মকর্তাদের পল্লী এলাকায় আর্থিক অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়নের দক্ষতা বৃদ্ধি করা।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব বেগম মাফরূহা সুলতানা বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য বা এসডিজি একটি নতুন বিষয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যকর দিক নিদের্শনার মাধ্যমে বাংলাদেশ দারিদ্র্য হ্রাসকরণে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে। আগামী ২০২১ সালের মধ্যে দারিদ্র্যের হার শতকরা ১৪ ভাগে নামিয়ে আনার লক্ষ্যে সবাই কাজ করছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। এতে দেশ ২০২১ এর মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতে পারবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, গ্রামীণ পিছিয়ে পড়া মানুষের আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাথে সংযোগ স্থাপন করা সম্ভব হলে এসডিজি অর্জন সহজ হবে। এ প্রসঙ্গে তিনি একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের কথা উল্লেখ করে বলেন, এর মাধ্যমে ডিজিটাল পদ্ধতিতে গ্রামীণ দরিদ্র সুফলভোগীদের আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাথে সংযোগ ঘটানোর কাজ করা হচ্ছে। বার্ড এ ধরণের আন্তর্জাতিক কর্মশালা আয়োজনের মাধ্যমে এসডিজি অর্জনে ভূমিকা রাখছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি আরো বলেন, পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে সবাই উপকৃত হতে সক্ষম হবে। তিনি এ ধরণের প্রশিক্ষণ কর্মশালা বার্ডে নিয়মিতভাবে আয়োজনের জন্য আর্ডো কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।

আর্ডো-এর প্রতিনিধি ও সম্মানিত অতিথি সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. মনোজ নরডেওসিংহ বলেন, এ ধরণের আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক কর্মশালা কার্যকরী ও সহায়ক বলেই আর্ডো সদস্য দেশসমূহের প্রতিনিধি নিয়ে বার্ড প্রতিনিয়ত আয়োজন করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, বার্ড তথা বাংলাদেশের সাথে আর্ডো-এর এই সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরো সুদৃঢ় হবে। তিনি বলেন, এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অভিজ্ঞতার বিনিময় হবে যা প্রশিক্ষণার্থীগণের কাজে আসবে। তিনি বার্ড কর্তৃপক্ষ এবং পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানান।

সভাপতির বক্তব্যে বার্ডের মহাপরিচালক ড. এম. মিজানুর রহমান বলেন, এসডিজি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। দেশের মাত্র ৩১ ভাগ মানুষের ব্যাংক হিসাব থাকার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, নারী ও অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর একটি বিরাট অংশ পুঁজির সংকটে রয়েছে। এদেরকে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাথে সংযোগ ঘটানো প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন। প্রশিক্ষণ কর্মশালাটি থেকে প্রশিক্ষণার্থীগণ নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক মিথষ্ক্রিয়ার মাধ্যমে আর্থিক প্রতিষ্ঠানে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্তকরণে সঠিক কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করতে সক্ষম হবে বলে তিনি মনে করেন। বার্ড এ সকল বিষয়ে ষাটের দশক থেকেই কাজ করছে বলে তিনি জানান। তিনি আর্ডো কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বার্ডের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) মিলন কান্তি ভট্টাচার্য্য এবং কোর্স কর্মশালা পরিচালক ও বার্ডের পরিচালক (পল্লী অর্থনীতি ও ব্যবস্থাপনা) ড. মো. শফিকুল ইসলাম।

আরো পড়ুন