কুমিল্লায় কাউন্সিলরের বুকে শেষ গুলিটি করে শাহ আলম

কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ১৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্যানেল মেয়র সৈয়দ মো. সোহেল ও তার সহযোগী হরিপদ সাহাকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন গুলিবিদ্ধ মো. বাদল। ঘটনার সময় তিনি সোহেলের সঙ্গেই কাউন্সিলর কার্যালয়ে বসা ছিলেন।

কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গুলিতে আহত মো. বাদল পুলিশ ও সাংবাদিকদের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে জানান, ‘প্রতিদিনের মতো বিকেলের এই সময়টাতে কাউন্সিলর সোহেল ভাইয়ের কার্যালয়ে বসে ছিলাম। বিকালে সোহেল ভাই কার্যালয়ে এলে একসঙ্গে বাইরে ঘোরাফেরা করি। সোমবার কার্যালয়ে সোহেল ভাই, আমিসহ ছয় জন বসে কথা বলছিলাম। বাইরে ঘুরতে বের হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি সবাই। এ সময় পিস্তল হাতে কার্যালয়ে ঢুকে পাঁচ জন। সবার মুখে মুখোশ, মাথায় হেলমেট এবং পরনে কালো পোশাক ছিল। র‌্যাব পরিচয় দিয়ে প্রথমে সোহেল ভাইয়ের মাথায় গুলি চালায়। পরে আমাদের ওপর গুলি চালায়। সোহেল ভাই মাটিতে পড়ে গেলে তাকে আরও দুটি গুলি চালায়।

বাদল বলেন, ‘গুলি চালানোর সময় তারা কথা বলেছে। কণ্ঠ শুনে দুই জনকে চিনতে পেরেছি। তারা হলো নবগ্রামের শাহ আলম ও তার সহযোগী একই এলাকার সোহেল। শাহ আলমের কণ্ঠ আমার পরিচিত। সোহেল কথা বলার মাঝে তোতলামি করেছে। বাকি তিন জনকে চিনতে পারিনি।’

বাদল আরও বলেন, ‘গুলিবিদ্ধ হয়ে আমি সোহেল ভাইয়ের পাশে শুয়ে পড়ি। তখন দেখেছি সোহেলের মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য বুকে শেষ গুলিটি করেছে শাহ আলম। সেই সঙ্গে বুকে লাথি মেরেছে। এরপর মুখের মুখোশ উঁচু করে বলেছে, এই সোহেল, আমি শাহ আলম, দেখে যা।’

বাদল বলেন, হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া ৫ জনের বিষয়ে ‍পুলিশকে জানিয়েছি। দুইজনের পরিচয়ও বলেছি।

এদিকে সোমবার বিকেলে ঘটনার পর কাউন্সিলর কার্যালয়ের সিসিটিভির ফুটেজ এবং একাধিক আলামত সংগ্রহ করেছে পুলিশ ও র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক সংস্থা। ঘটনার ক্লু উদঘাটনে কাজ করছেন তারা।

স্থানীয় একাধিক দায়িত্বশীল ব্যক্তি ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হামলাকারীদের টার্গেট ছিল কাউন্সিলর সোহেল। এঘটনার পেছনে রয়েছে ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব, মাদক, গোমতী নদীর মাটি ও বালু ব্যবসায় আধিপত্য বিস্তার।

কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) আব্দুর রহীম বলেন, কাউন্সিলর সোহেলসহ দুই জন নিহতের ঘটনায় পুলিশের তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। বেশ কিছু আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে এখনও পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়নি। অন্যদিকে ১৬ ও ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় রাতে হামলা, ভাঙচুরের ঘটনা ঘটলেও কেউ অভিযোগ দেয়নি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে কাজ করছে পুলিশ।

সূত্রঃ ইনকিলাব

আরো পড়ুন