মুরাদনগরের অনন্তপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক ক্লাসে দুই শ্রেণির পাঠদান
মুরাদনগর সংবাদদাতাঃ কুমিল্লা মুরাদনগর উপজেলার অনন্তপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রায় একযুগ যাবত শ্রেণিকক্ষ সংকটে ভুগছে। ফলে একই কক্ষে দুইটি শ্রেনীর শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে স্কুলটির। আবার স্কুল মাঠে প্রায় ৭ হাজার বর্গফুট আয়তনের একটি গর্ত থাকায় শিক্ষার্থীদের নিয়ে স্কুল চলাকালে পুরুটা সময় শিক্ষক ও অভিভাকদের থাকছে আতঙ্কে। এতে করে যে কোন সময় ঘঠতে পারে প্রাণহাণির মতো ঘটনা। শ্রেণি কক্ষ্য সংকটটি স্কুলটির প্রধান সমস্যা হলেও বর্ষাকালে স্কুল মাঠ থাকে জলাবদ্ধ, শিক্ষক, টয়লেট ও বিশুদ্ধ পানি সংকট নিয়ে চালানো হচ্ছে পাঠদান। নানান সমস্যায় জর্রজরিত এ বিদ্যালয়টি শিক্ষার্থীদের লোখাপড়ার দারণভাবে ব্যহত হচ্ছে। এতে করে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ে প্রশাসনিক কার্যক্রমসহ শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। যা মোট জনসংখ্যার শতভাগ শিক্ষার আওতায় আনার পথে অন্তরায়।
জানা যায়, ১৯৬৮ সালে ৩৩ শতাংশ জমি নিয়ে স্থানীয় শিক্ষানুরাগী আইন উদ্দিন, সামছু উদ্দিন ও আব্দুল কাদের স্কুলটি স্থাপন করেন। বর্তমানে শিশু শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী পড়াশুনা করছে। স্কুলটিতে ১৯৯৬ সালে চার কক্ষ বিশিষ্ট একটি ভবন নির্মিত হলেও ভবনটির বর্তমান চিত্র খুবই জরাজীর্ণ। এর মধ্যে অফিস কক্ষসহ শ্রেনি কক্ষ গুলোতে গাধা-গাধি ভাবে চলছে বিদ্যালয়ের শিক্ষার কাযক্রম। অপর দিকে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে শিক্ষার্থী বেশি হওয়া ও শ্রেণি কক্ষ সংকট হওয়ায় প্রায় একযুগ ধরে একই রোমে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম। যাতে করে গড়ম কালে অনেক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ছে। একটু বৃষ্টিতেই স্কুল চত্বরে হাটু পানি জমে বন্ধ হয়ে যায় যাতায়াতের পথ। এতে করে অনেক শিক্ষার্থী স্কুলে আসা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এতে করে গ্রামটিতে শিক্ষার হার দিন দিন কমে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। মাত্র ৩টি কক্ষে শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম চলায় শিক্ষার্থীরা যেমন শিক্ষা গ্রহণের পরিবেশ হারাচ্ছে, তেমনি ব্যাহত হচ্ছে স্কুলের স্বাভাবিক পাঠদান কার্যক্রম। এছাড়া অংক, ইংরেজী, বিজ্ঞান ও আইসিটি বিষয়ের কোন শিক্ষক না থাকায় মারাত্মক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে লোখাপড়া। সরকার সবকয়টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (প্রজেক্টরভিক্তিক) মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে সকল বিষয়ে ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহন করলেও স্কুলটিতে মাল্টিমিডিয়া বিষয়ক কোন প্রশিক্ষন প্রাপ্ত শিক্ষক না থাকা ও প্রজেক্টর না পাওয়ায় ডিজিটাল যুগে ডিজিটাল শিক্ষা (মাল্টিমিডিয়া) থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। গত ৬/৭ বছর থেকে বিভিন্ন পরীক্ষায় ৮০ ভাগ শিক্ষার্থী পাশ করে আসলেও বিদ্যালয়টির প্রতি কর্তৃপক্ষ সু-নজর দিচ্ছেনা বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীরা অভিযোগ করে বলেন, শিক্ষার্থীর তুলনায় শ্রেণী কক্ষ কম ও বিষয় বিত্তিক শিক্ষক না থাকায় প্রতিনিয়ত বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। অচিরেই স্কুল মাঠে থাকা গর্তটি কর্তৃপক্ষ ভরাট করবে এমনটাই আশা শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের।
চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ইমরান জানান, স্কুল মাঠে জলাবদ্ধা ও গর্ত থাকায় জন্য আমাদের দুর্ভোগের শেষ নেই। সকল শিক্ষার্থীদের ভয়ে ভয়ে স্কুলে খেলাধূলা করতে হয়। প্রায় সময় অনেক শিক্ষার্থীরা গর্তে পড়ে অহত হচ্ছে। এতে করে আতঙ্কে অনেক শিক্ষার্থী স্কুলে আসা বন্ধ করে দিয়েছে।
অনন্তপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাউছারুল আলম ভূইয়া বলনে, প্রতিদিন একই শ্রেনি কক্ষে এক সাথে দুইটি ক্লাস চলার কারনে শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের কথা শুনতে পারছেনা অপরদিকে শিক্ষকও ছাত্রদের পড়া শুনতে পায়না। এতে করে শিক্ষার্থীদের নিয়ন্ত্রণ ও সঠিক শিক্ষা প্রদান করা অসম্ভব হয়ে পরেছে। তা ছাড়া টয়লেট না থাকায় শিক্ষার্থীরা, বিশেষ করে মেয়েরা নানা বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে। বিদ্যালয়ের নানান সমস্যা আমি লিখিত ভাবে কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তিনি আরো বলেন, বিদ্যালয় মাঠে জলাবদ্ধতার বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে কতৃপক্ষ ক্ষুদ্র পরিমান সহযোগিতা ছারা। সম্পূর্ন ভাবে স্থায়ী সমাধানের ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। অচিরেই যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে বিদ্যালয়টি প্রাণ হারাবে।
মুরাদনগর উপজেলা শিক্ষা অফিসার আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘বিদ্যালয়টি নানান সমস্যায় জর্জরিত। জরুরি ভিত্তিতে সমস্যা লাগবের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিতু মরিয়ম বলেন, ‘বিদ্যালয়টির বেশ কয়েকটি সমস্যা রয়েছে। ইতোমধ্যে খোজ খবর নিয়েছি। অচিরেই সমস্যা লাগব হবে আশা করছি।