কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় আইনেই নেই ছাত্র সংসদ!
ডেস্ক রিপোর্টঃ সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন হওয়ার পর নড়েচড়ে বসেছে জগন্নাথ, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠনগুলো। এরই ধারাবাহিকতায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ছাত্র সংগঠনগুলো ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (কুকসু) নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছে। কিন্তু কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় আইনেই নেই ছাত্র সংসদ।
এ ব্যপারে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য ড.এমরান কবীর চৌধুরী বলেন, ‘কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় আইনে কিছু বলা নেই৷ তবে সাধারন শিক্ষার্থীরা নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছে। যদি এ নির্বাচন করতে হয় তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় আইন পরিবর্তন করতে হবে। না হলে নির্বাচন করা সম্ভব হবে না।’
ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী মাজহারুল ইসলাম হানিফ বলেন, ‘ছাত্র সংসদ ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব তৈরিতে সহায়ক ভুমিকা পালন করে। কিন্তু দীর্ঘদিন বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে ছাত্র সংসদ গঠন না করায় ছাত্রদের মধ্যে হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। ছাত্র সংসদের প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচনের উদ্যোগ গ্রহন করেছে।আমরা আশাবাদী কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেবে।’
কুকসু নির্বাচনের দাবি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়েরর ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী হামিদ কাওসার জীবন বলেন, ‘এটি খুবই অবাক করার বিষয় যে, পাকিস্তান আমল থেকে সামরিক শাসনামলে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হলেও গনতান্ত্রিক শাসনামলে তা রহস্যজনক কারনে বন্ধ আছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনেরও ছাত্র সংসদ নির্বাচনের উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত।’
গণ যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী শাওন খান মুবিন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক দলগুলো রাজনৈতিক মতাদর্শের অধিকারী, সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো শিল্প-সংস্কৃতির প্রতিনিধিত্ব করে। সামগ্রিক অর্থাৎ সার্বজনীন প্রতিনিধিত্ব করবে কে? সাধারণ শিক্ষার্থী হয়ে নেতৃত্বের চর্চা ও সহমত, ভিন্ন মত প্রকাশের একটি শৈল্পিক প্লাটফর্ম হচ্ছে ছাত্র সংসদ। কুবিতে ছাত্র সংসদ গঠিত হলে আমরা সুযোগ পাবো গণতন্ত্র চর্চার, সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে গড়ে উঠবে নেতৃত্বের গুণাবলী।’
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে একমাত্র প্রকাশ্যে সক্রিয় আছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। অন্য সংগঠন গুলো কার্যক্রম চালায় গোপনে। এসব সংগঠনের কয়েকজনের সাথে কথা বললে তারা জানান, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ছাত্র সংসদ নির্বাচন অবশ্যই ভালো দিক। কিন্তু ক্যাম্পাসে ছাত্র সংগঠন গুলোর সহাবস্থান দরকার। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রদলের প্রচার সম্পাদক আবুল বাশার বলেন, ‘সব ছাত্র সংগঠনের বিশ্ববিদ্যালয়ে সহাবস্থান দরকার, এবং এর মাধ্যমেই ছাত্র সংসদ নির্বাচন সম্ভব হবে।’
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের ছাত্র সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে কোনো দ্বিমত নেই। তারাও নির্বাচন চান। এর আগে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ বলেছিলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যেহেতু নির্বাচন হতে যাচ্ছে, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়েও হবে। আগে ডাকসু নির্বাচন হোক পরে আমরা প্রশাসনের সাথে কথা বলবো। ‘
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এমরান কবির চৌধুরী বলেন, ‘আমাকে বিশ্ববিদ্যালয় আইন মেনে কাজ করতে হবে। এর বাইরে কিছু করতে পারবো না। যেহেতু কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় আইনে কিছু বলা নেই । তাই আমি কিছু করতে পারবো না। এ ব্যাপারে কিছু করতে হলে আইন পরিবর্তন করতে হবে।’