মুরাদনগরে আদালতের নির্দেশে গৃহবধূর লাশ উত্তোলন
ডেস্ক রিপোর্টঃ কুমিল্লার মুরাদনগরে আদালতের নির্দেশে গৃহবধূ লাইলী আক্তারের লাশ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে।
প্রায় সাড়ে চার মাস পর মঙ্গলবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুরাদনগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইফুল ইসলাম কমলের উপস্থিতিতে উপজেলার পৈয়াপাথর গ্রামের একটি কবরস্থান থেকে ওই গৃহবধূর লাশ উত্তোলন করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, পিবিআইয়ের ইন্সপেক্টর হিলাল উদ্দিন, মুরাদনগর থানার এসআই বাদল, স্থানীয় গনমাধ্যম কর্মীসহ এলাকার বিপুল সংখ্যক লোকজন।
মামলার অভিযোগে জানা যায়, প্রায় ১০ বছর পুর্বে জেলার ব্রাহ্মনপাড়া উপজেলার ষাইটশালা গ্রামের জীবন মিয়ার কন্যা লাইলী আক্তারের সাথে মুরাদনগর উপজেলার পৈয়াপাথর গ্রামের হারুনুর রশীদের ছেলে রুবেল মিয়ার সাথে পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়। এ দম্পতির দুটি কন্যা এবং একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। পারিবারিক কলহের জের ধরে চলতি বছরের ২০ মে স্বামী রুবেল মিয়া, তার দুই ভাই ও কয়েকজন বন্ধু নিয়ে স্ত্রী লাইলী আক্তারকে ব্যাপক মারধর করে। এক পর্যায়ে ওই গৃহবধূর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়। এ সময় তার চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন এসে লাইলী আক্তারকে উদ্ধারে করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে প্রেরন করে। ২৬ মে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢামেকে লাইলীর মৃত্যু হয়। এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃস্টি হয়। পরে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই তরিগড়ি করে ওই গৃহবধূর লাশ দাফন করে ঘাতকরা।
এ নিয়ে লাইলীর মা জামিলা খাতুন ৭ জুলাই আদালতে মামলা দায়ের করে। আদালত মামলাটি থানায় এজহারভূক্ত করে তদন্ত করতে পিবিআইকে নির্দেশ প্রদান করেন। এরই প্রেক্ষিতে পিবিআই মামলার প্রধান আসামী রুবেল মিয়াকে গ্রেফতার ও জিজ্ঞাসাবাদ করে জেলহাজতে প্রেরণ করে। জিজ্ঞাসাবাদে রুবেল পিবিআইয়ের কাছে ঘটনার গুরুত্বপুর্ণ ও চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রদান করে করে বলে জানা যায়। তবে তাকে কোন প্রকার নির্যাতন এবং মারধর হরা হয়নি এমনটি জানিয়ে গ্যাসের চুলায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে লাইলীর মৃত্যু হয়েছে বলে আসামীদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়।
এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন বলেন, আদালতের নির্দেশে ময়নাতদন্তের জন্য গৃহবধূ লাইলী আক্তারের লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন প্রধান ঘাতক রুবেল মিয়াকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। তদন্ত করে বাকী আসামীদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।