কুমিল্লা বীরচন্দ্রনগর মিলনায়তন ও পাঠাগার রক্ষায় ৫০ নাগরিকের বিবৃতি
কুমিল্লার ঐতিহ্যবাহী বীরচন্দ্রনগর মিলনায়তন ও পাঠাগার ভবন ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার দাবি জানিয়েছেন সুশীল সমাজের নাগরিকেরা। লেখক, কবি, সাহিত্যিক ও শিক্ষক মহলের প্রায় ৫০ জন নাগরিক ইতিহাসের স্মৃতিবিজড়িত এই ভবন রক্ষায় বিবৃতি দিয়েছেন।
বিবৃতিতে তারা বলেন, আমরা গভীর উদ্বেগ ও দুঃখের সঙ্গে জেনেছি যে, সম্প্রতি ১৩৫ বছরের ঐতিহ্যবাহী কুমিল্লা টাউন হলের বীরচন্দ্রনগর মিলনায়তন ও পাঠাগারের আদি ভবন ভেঙে নতুন স্থাপনা নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
১৮৮৫ সালে ত্রিপুরার মহারাজা কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত এই মিলনায়তন মহাত্মা গান্ধী, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, কাজী নজরুল ইসলাম, মওলানা ভাসানী, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিবাহী স্থান।
মিলনায়তন সংলগ্ন পাঠাগারটি দেশের প্রাচীনতম পুস্তক সংগ্রহালয়ের অন্যতম। শতবর্ষী এই ভবনে মঞ্চস্থ হয়েছে বাংলার সেরা সব নাটক। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, ভাষা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত এই ভবন ভাঙার পরিকল্পনা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক এবং ইতিহাস-ঐতিহ্যের মূলে কুঠারাঘাত। ঐতিহ্যবিনাশী এই ধরনের পরিকল্পনা অগ্রহণযোগ্য। ইতিহাসের কিছু কিছু নিদর্শন রেখে দিতে হয় পরবর্তী প্রজন্মের জন্য। নইলে ইতিহাস-বিস্মৃতির প্রবণতা মাথাচাড়া দেয়।
আমরা সরকারের কাছে অবিলম্বে কুমিল্লার বীরচন্দ্রনগর মিলনায়তন ও পাঠাগারের আদি ভবন বিনাশের পরিকল্পনা বাতিলের দাবি জানাই। পাশাপাশি কুমিল্লা টাউন হল প্রাঙ্গণে অবস্থিত উপমহাদেশের চিন্তাচর্চার অন্যতম সূতিকাগার থিওসফিক্যাল সোসাইটির ভবনটিও সুরক্ষা করে পুরো প্রাঙ্গণকে ‘ঐতিহ্য এলাকা’ (Heritage Site) ঘোষণা ও সংরক্ষণের দাবি জানাই।
ভবন রক্ষায় বিবৃতি প্রদান করেন- ভাষাসংগ্রামী আহমদ রফিক, অধ্যাপক সন্জীদা খাতুন, ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, অধ্যাপক যতীন সরকার, অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান, অধ্যাপক হায়াৎ মামুদ, কথাশিল্পী হাসান আজিজুল হক, কবি আসাদ চৌধুরী, কবি রুবী রহমান, কবি নির্মলেন্দু গুণ, শিল্পী হাশেম খান, কথাসাহিত্যিক আনোয়ারা সৈয়দ হক, কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার, অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, ড. সোনিয়া নিশাত আমিন, অধ্যাপক শফি আহমেদ, অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, ড. ভূঁইয়া ইকবাল, নাট্যজন আতাউর রহমান, নাট্যজন মামুনুর রশীদ, লেখক আবুল মোমেন, নাট্যজন ফেরদৌসী মজুমদার, নাট্যজন নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, অধ্যাপক আবুল আহসান চৌধুরী, গবেষক, কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক, লেখক আবুল হাসনাত, ড. মালেকা বেগম, কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী, কবি মুহাম্মদ সামাদ, সাবেক ডাকসু ভিপি মাহফুজা খানম, অধ্যাপক আবদুল মান্নান চৌধুরী, সংস্কৃতিজন গোলাম কুদ্দুছ, সাংবাদিক নাসিমুন আরা হক, সংস্কৃতিজন হাসান আরিফ, কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক, সংস্কৃতিজন শীলা মোমেন, স্থপতি জালাল আহমেদ, স্থপতি ইকবাল হাবিব, স্থপতি আবু সাঈদ, স্থপতি এহসান খান, স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন, কবি দিলারা হাফিজ, কবি তারিক সুজাত, কবি শাহেদ কায়েস, কবি সাকিরা পারভীন, কথাসাহিত্যিক স্বকৃত নোমান, কবি পিয়াস মজিদ, কথাসাহিত্যিক মোজাফ্ফর হোসেন।
সূত্রঃ ঢাকাটাইমস