আবাসন সুবিধাহীন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯০ ভাগ শিক্ষার্থী
ডেস্ক রিপোর্টঃ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) প্রায় ৯০ ভাগ শিক্ষার্থীর আবাসিক সুবিধা নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯টি বিভাগে মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় সাড়ে ছয় হাজার। কিন্তু সে অনুযায়ী আবাসন সুবিধা না বাড়ায় দুর্ভোগে পড়ছে শিক্ষার্থীরা। আবাসন সুবিধা পর্যাপ্ত না থাকায় শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে ও শহরে বিভিন্ন মেসে থাকতে হচ্ছে। মেস বা বাসার মালিকরাও ভাড়া নিচ্ছেন অনেক বেশি। তাছাড়াও শিক্ষার্থীদের বাইরে থাকায় নিরাপত্তাহীনতা, যাতায়াতে ভোগান্তিসহ বিভিন্ন ধরনের দুর্ভোগে পড়তে হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯টি বিভাগে নিয়মিত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছয় হাজার ২৮০ জন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি আবাসিক হলে মাত্র ৬০৪ জন শিক্ষার্থীর আবাসনব্যবস্থা রয়েছে। ৬০৪টি সিট থাকলেও সেখানে গাদাগাদি করে থাকছেন প্রায় ৯০০ শিক্ষার্থী। অর্থাৎ মোট শিক্ষার্থীর ৮৬ শতাংশ শিক্ষার্থীই আবাসন সুবিধা থেকে বঞ্চিত। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট চারটি হলের তিনটি ছাত্রদের আর ছাত্রীদের হল মাত্র একটি।
বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ছাত্র সংখ্যা চার হাজারেরও একটু বেশি। ছাত্রদের তিনটি কাজী নজরুল, বঙ্গবন্ধু ও ধীরেন্দ্র নাথ দত্ত হলে আবাসন ব্যবস্থা রয়েছে মাত্র ৫০৫ জনের। অপরদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রী রয়েছেন দুই হাজার ২৪৮ জন। একমাত্র আবাসিক হল নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী হলে আবাসন ব্যবস্থা রয়েছে মাত্র ২০০ জনের। সেখানে থাকছেন ২৯৯ জন। ছাত্রদের হলে সিট পাওয়া গেলেও ছাত্রী হলে সিট পাওয়া প্রায় অসম্ভব। বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র ছাত্রী হলে ফাইনাল ইয়ারে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদেরও বেড শেয়ার করে থাকতে হচ্ছে। তীব্র আবাসন সংকট থাকায় হলগুলোতে একরকম মানবেতর জীবনযাপন করছেন বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী। চারটি হলে মোট ছয়টি গণরুম রয়েছে, যেখানে প্রতিরুমে ২০-২২ জন করে থাকছে।
গণরুমে থাকা ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. রাসেল ও মো. সামিউল বলেন, ‘হলের গণরুমে একসঙ্গে ২০-২২ জন করে থাকতে হচ্ছে। এতে পড়ালেখার বিঘ্ন হচ্ছে। তাছাড়া সময়মতো ঘুমানোও যায় না। ফ্যানগুলো বাতাসের চেয়ে শব্দ উৎপাদন করে বেশি! টয়লেটগুলোর অবস্থাও নাজুক।’
পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বিভাগের ছাত্র নজরুল হলে থাকা শাহাদাত বিপ্লব বলেন, ‘হলের চার পাশে ঝোপ জঙ্গল। প্রায় রুমে সাপ ঢুকে যায়। হলের ডাইনিং ব্যবস্থা ভালো নয়। শৌচাগারের অবস্থাও নাজুক।’
সদ্য সাবেক শিক্ষার্থী জয়নাল আবেদীন রনি বলেন, ‘শহর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার রাস্তা খারাপ। তাই শহরে থেকে ক্যাম্পাসে যাওয়া আসা অনেক কষ্টের বিষয়। তাছাড়া পরিবহন সংকটের কারণেও শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগে পড়তে হয়।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. মো. আবু তাহের বলেন, ‘ছয় মাসের মধ্যে আমরা ৩০০ ছাত্র ও ৩০০ ছাত্রীর আবাসনব্যবস্থা করে দিতে পারব। এ ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের দশ তলা একটি ছাত্র হল এবং একটি ছাত্রী হল নির্মাণের প্রজেক্ট হাতে নেওয়া হয়েছে। আশা করছি খুব দ্রুত তা বাস্তবায়ন হবে।’
সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন