চান্দিনায় ঝুঁকি নিয়ে মহাসড়ক পার হচ্ছে হাজারো পথচারী
নাজিম উদ্দিন ভূঁইয়াঃ ব্যস্ততম ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ফোর লেনে রূপান্তরের পাশাপাশি বিভিন্ন স্টেশন এলাকাসহ জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানে নির্মিত ফুটওভার ব্রীজ গুলোর অধিকাংশই যথাযথ ব্যবহার হচ্ছে না। ফুটওভার ব্রীজ ব্যবহার না করে ঝুঁকি নিয়ে মহাসড়ক পার হচ্ছেন হাজার হাজার পথচারীরা । এতে প্রতিনিয়তই ঘটছে কোন না কোন দুর্ঘটনা, বাড়ছে যানজট।
মহাসড়কের কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার চান্দিনা-বাগুর বাস স্টেশন ও মাধাইয়া বাজার বাস স্টেশনে ২টি ফুটওভার ব্রীজ থাকলেও সেগুলো ব্যবহারে পথচারীদের অনিহা চোখে পড়ে।
ওই ২টি ফুটওভার ব্রীজ এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ফুটওভার ব্রীজের সন্নিকটে লো ডিভাইডার (নিচু ডিভাইডার) থাকায় এবং হাই ডিভাইডারের উপরে কাঁটা তাঁরের বেড়া না থাকায় ফুটওভার ব্রিজ গুলো ব্যবহার করছে না পথচারীরা। ফুটওভার ব্রীজের ২০-৫০ ফুট নিকটে লো ডিভাইডার থাকায় ৬০-৬৫ টি সিঁড়ি অতিক্রম করে ২০ ফুট উচ্চতার ফুটওভার ব্রীজ ব্যবহার করতে অনিহা-ই বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
চান্দিনা ও দেবিদ্বার উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থিত চান্দিনা-বাগুর বাস স্টেশনটি অনেক জনগুরুত্বপূর্ণ স্টেশন। ওই স্টেশন প্রতি মিনিটে ৫০-৭০জন যাত্রী মহাসড়ক পারাপার হচ্ছে। কোন যাত্রীই ২০ ফুট উচ্চতার ফুটওভার ব্রীজ ব্যবহার না করে এক ফুট উচ্চতার লো ডিভাইডারের উপর দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মহাসড়ক পারাপার হচ্ছে। উপজেলার মাধাইয়া বাস স্টেশন এলাকার ফুটওভার ব্রীজটিরও একই অবস্থা। ওই ব্রীজটি পূর্ব পাশে ৫০ ফুট ও পশ্চিম পাশে ১শ ফুট দূরত্বে লো ডিভাইডার থাকায় পথচারীরা ফুটওভার ব্রীজ ব্যবহার করছে না।
আর যাত্রীদের ফুটওভার ব্রীজ ব্যবহার করতে পুলিশ প্রায়ই অভিযান চালাতে দেখা গেলেও তা ওই অভিযান পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাকে।
চান্দিনা-বাগুর বাস স্টেশন সংলগ্ন বাসিন্দা লিটন সরকার জানান, চান্দিনা ও মাধাইয়া বাস স্টেশন এলাকার ফুটওভার ব্রীজ গুলো মূলত অপরিকল্পিত ভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। ফুটওভার ব্রীজের ২০-৫০ ফুটের মধ্যে যদি ১ফুট উচ্চতার লো ডিভাইডার থাকে তাহলে কি কেউ ২০ ফুট উচ্চতার ফুটওভার ব্রীজ ব্যবহার করবে? প্রকৃত পক্ষে ফুটওভার ব্রীজ থেকে অন্তত ২শ ফুট পর্যন্ত হাই ডিভাইডার দেওয়া হলে বাধ্য হয়েই পথচারীরা ফুটওভার ব্রীজ ব্যবহার করতো।
হাইওয়ে পুলিশ ইলিয়টগঞ্জ ফাঁড়ির ইন-চার্জ (ইন্সপেক্টর) মো. মনিরুল ইসলাম জানান, পথচারীদের ফুটওভার ব্রীজ ব্যবহার করার জন্য আমরা অনেক প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। কিন্তু কিছুতেই কাজে আসছে না। ফুটওভার ব্রীজ সংলগ্ন লো ডিভাইডার গুলোকে হাইডিভাইডারে পরিণত না করলে বা লো ডিভাইডারের উপর কাঁটা তারের বেড়া না দিলে এ সমস্যার সমাধান হবে না।
হাইওয়ে পুলিশ কুমিল্লা উত্তর অঞ্চল এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রহমত উল্লাহ অপু জানান, এ বিষয়টি নিয়ে আমরা ফোর লেন প্রকল্পের কর্মকর্তাদের সাথে অনেক বার কথা বলেছি। কিন্তু প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার পর ফোর লেনের কোন কর্মকর্তাকেই পাওয়া যাচ্ছে না। বিষয়টি সমাধানে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।
এব্যাপারে কুমিল্লা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ছোহরাব আলী জানান, ফুটওভার ব্রীজগুলো ব্যবহারে পথচারীদের বাধ্য করা ছাড়া বিকল্প কিছু নেই। সেজন্য প্রতিটি ফুটওভার ব্রীজের উভয় পাশে এক থেকে দেড়শ মিটার হাই-ডিভাইডার এবং র্যালিং করার জন্য আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট যোগাযোগ করবো।