৪ ডিসেম্বর কুমিল্লার দেবিদ্বার শক্রমুক্ত দিবস
মোঃ ফখরুল ইসলাম সাগরঃ আজ ৪ ডিসেম্বর দেবিদ্বার হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এদিনে মুক্তি ও মিত্র বাহিনীর যৌথ আক্রমনে দেবিদ্বার হানাদার মুক্ত হয়েছি। দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন উপলক্ষ্যে দেবিদ্বার উপজেলা প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, দেবিদ্বার প্রেসক্লাব’র যৌথ উদ্যোগে নানা কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়েছে। সকাল ১০টায় মুক্তিযুদ্ধ চত্তর ও গণকবরে শহীদদের সম্মানার্থে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হবে।
১৯৭১ সলের রক্তেঝরা দিনগুলোতে মুক্তি ও মিত্রবাহিনীর যৌথ আক্রমনে হানাদার মুক্ত হয়েছিল কুমিল্লার বিভিন্ন অঞ্চল। তারই ধারাবাহিকতায় দেবিদ্বার এলাকা হানাদার মুক্ত হয়েছিল ৪ ডিসেম্বর। মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর যৌথ অভিযানে ৩ ডিসেম্বর বিকেল থেকেই হানাদারদের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমন পরিচালনা করা হয়েছিল। মিত্রবাহিনীর ২৩ মাউন্টেন ডিভিশনের জেনারেল আর, ডি হিরার নেতৃত্বে বৃহত্তর কুমিল্লায় এই অভিযান পরিচালিত হয়। ওই দিন রাতে মুক্তিবাহিনী কর্তৃক ‘কুমিল্লা- সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়ক’র কোম্পানীগঞ্জ সেতুটি মাইন বিষ্ফোরনে উড়িয়ে দেয়া হয়। মিত্রবাহিনীর একটি ট্যাংক বহর বুড়িচং -ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা হয়ে দেবিদ্বারে আসে। হানাদাররা ওই রাতেই দেবিদ্বার ছেড়ে কুমিল্লা সেনানিবাসে পালিয়ে যায়। ধীরে ধীরে মুক্তিবাহিনীর বিভিন্ন গ্রুপ দেবিদ্বার সদরের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। এরই মধ্যে মিত্রবাহিনীর ট্যাংক বহরটি দেবিদ্বার থেকে চান্দিনা সেড়ক হয়ে ঢাকা অভিমুখে যাওয়ার সময় মোহনপুর এলাকায় ভুল বোঝাবুঝির কারনে মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে গুলি বিনিময় হলে মিত্রবাহিনীর ৬ সেনা সদস্য নিহত হন। পাক সেনারা মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধে ওই রাতেই পালিয়ে ময়নামতি ক্যান্টনম্যান্টে চলে যাওয়ার সংবাদে ৪ ডিসেম্বর ভোর থেকেই বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন গ্রুপগুলো এবং হাজার হাজার জনতা স্বাধীন বাংলার পতাকা নিয়ে উপজেলা সদর অভিমূখে আসতে থাকে এবং ‘জয়বাংলা” শ্লোগানে বিজয়ের উল্লাসে উপজেলা সদর প্রকম্পিত করে তোলে।
এ ছাড়া দেবিদ্বারে স্বাধীনতা সংগ্রামে অবদান ছিল অবিশ্বরনীয়। মুক্তিযুদ্ধে অবদান রক্ষায় প্রবাসী সরকারের উপদেষ্টা মন্ডলীর একমাত্র জীবিত সদস্য ন্যাপ প্রধান অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমেদ, ন্যাপ-সিপিবি-ছাত্র ইউনিয়ন কর্তৃক গঠিত বিশেষ গেরিলাবাহিনীর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য কমরেড আব্দুল হাফেজ, যুদ্ধকালীন সময়ে ভারতের পালাটোনাক্যাম্প প্রধান সাবেক সাংসদ যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন সুজাত আলী, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক সাবেক এম,এন,এ আব্দুল আজিজ খান, আজগর হোসেন মাষ্টারসহ অসংখ্য যোদ্ধা অবদান রেখেছেন।