কুবিতে শিক্ষকদের পাল্টাপাল্টি মানববন্ধন
![](https://dailycomillanews.com/wp-content/plugins/print-bangla-news/assest/img/print-news.png)
কুবি প্রতিনিধিঃ উপাচার্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, নিয়োগে বানিজ্য, সরকারী অর্থ আত্মসাৎ, আত্মীয়করণ, শিক্ষক লাঞ্ছনাসহ নানা অভিযোগে তার অপসারণ ও বিচার দাবিতে এবং ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক(সম্মান) শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষা স্থগিতের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে শিক্ষক সমিতি। এদিকে শিক্ষকদের পদোন্নতি প্রক্রিয়া বন্ধ হওয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে উপাচার্যপন্থী শিক্ষকরা। মঙ্গলবার দুপুরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে শিক্ষকদের দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে মানববন্ধন করে।
উপাচার্যপন্থী শিক্ষকদের মানববন্ধনে বক্তারা শিক্ষকদের পদোন্নতি প্রক্রিয়া বন্ধ হওয়ার তীব্র সমালোচনা করেন। এসময় উপাচার্যপন্থী শিক্ষকরা তাদের বক্তব্যে দেশের শীর্ষ সারির কিছু গণমাধ্যমকে কটুক্তি করে বক্তব্য প্রদান করেন।
শিক্ষক সমিতির নেতারা মানববন্ধনে তাদের বক্তব্যে বলেন, ‘নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যাওয়ায় উপাচার্য এবং তার সহযোগী শিক্ষকদের নিয়োগ বাণিজ্য বন্ধ হয়ে গেছে। এজন্য তারা ক্ষিপ্ত হয়ে নানা ধরনের ভিত্তিহীন অভিযোগ করছে। উপাচার্য তার অনুসারী শিক্ষকদের দিয়ে পরিকল্পিতভাবে ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত করার মত পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছেন। ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত করার উদ্দেশ্যে ভর্তি পরীক্ষার টেকনিক্যাল কমিটির সমন্বয়ক উপাচার্যপন্থী শিক্ষক দুলাল চক্রবর্ত্তী ভর্তি পরিক্ষার মাত্র তিন দিন আগে ওএমআর শীট আনার জন্য তারিখ নির্ধারণ করেন। এই অল্প সময়ের মধ্যে ওএমআর শীট যাচাইবাচাই সম্ভব নয় বলে ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।’ উপাচার্যের নিদের্শেই দুলাল চক্রবর্ত্তী ধীর গতিতে ওএমআর শীট আনার কাজ করেছেন বলে শিক্ষক নেতারা অভিযোগ করেন।
শিক্ষক সমিতির নেতারা আরো অভিযোগ করে বলেন, ‘বন্যার্তদের জন্য বরাদ্দকৃত শিক্ষকদের একদিনের বেতনের টাকা উপাচার্যপন্থী শিক্ষক দুলাল চন্দ্র নন্দী এবং প্রক্টর ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন শিক্ষকদের স্বাক্ষর জাল করে অবৈধভাবে শিক্ষকদের বেতন কেটে নিয়েছন। উপাচার্য বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনকে আত্মীয়করণের লক্ষ্যে যোগ্য প্রার্থী থাকার পরও বন্ধুর মেয়ে রেনেসাঁ আহমেদ সায়মাকে ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক পদে নিয়োগ দিয়ে অনিয়মের নজির স্থাপন করেছেন।’
মানববন্ধনে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসানের উপস্থাপনায় বক্তব্য রাখেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. মোঃ আবু তাহের, সহ-সভাপতি এন এম রবিউল আউয়াল চৌধুরী, শামীমুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী ওমর সিদ্দিকী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মোঃ আসাদুজ্জামান প্রমুখ।
এদিকে শিক্ষক সমিতির অসহযোগীতায় ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে মানবন্ধনে উপাচার্যপন্থী শিক্ষকরা এমন দাবি করলেও বিশ^বিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত এক সভার সিদ্ধান্তে উল্লেখ করা হয় অনুষদসমূহের উপ-কমিটি তাঁদের কাজ সম্পন্ন করতে পারেনি বিধায় ভর্তি অনিবার্য কারনবশতঃ ভর্তি পরীক্ষা স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো: আলী আশরাফ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অনিবার্য কারণে ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত করেছে।’
উল্লেখ্য, উপাচার্যের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগে গত ১৬ অক্টোবর থেকে উপাচার্যের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে আন্দোলন করে আসছে শিক্ষক সমিতি ও বঙ্গবন্ধু পরিষদ। শিক্ষক সমিতি কর্তৃক উপাচার্যের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ আমলে নিয়ে গত ২৯ অক্টোবর পরিবর্তি নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সকল প্রকার নিয়োগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রনালয়।