কুমিল্লায় গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান থেকে কনেকে তুলে নিয়ে গেলেন ছাত্রলীগ নেতা
কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার আদ্রা দক্ষিণ ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড চাটিতলা দক্ষিণপাড়া গ্রামের দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে তুলে নিয়ে গেছেন ছাত্রলীগ নেতা।
বৃহস্পতিবার রাতে গায়ে হলুদ অনুষ্ঠান থেকে অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে যায়। অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা একই গ্রামের উত্তর পাড়ার কামাল হোসেনের ছেলে জুনায়েদ।
স্থানীয় ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার আদ্রা দক্ষিণ ইউনিয়নের চাটিতলা গ্রামের আব্দুল কাইয়ুমের মেয়ে নিপা আক্তারের গত ২৪শে আগস্ট কোর্ট এফিডেভিটের মাধ্যমে বিয়ে হয় পার্শ্ববর্তী মনোহরগঞ্জ উপজেলার কাঠনী পাড়া বরল্লা গ্রামের সাইদুল হকের ছেলে বদিউল আলমের সঙ্গে। বর ও কনে পক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত শুক্রবার আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে কনেকে শ্বশুরবাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কথা।
বৃহস্পতিবার রাতে কনের গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি চলাকালীন সময়ে ইউনিয়ন ছাত্রলীগ নেতা জুনায়েদ, আদ্রা উত্তর ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি মিলন মজুমদার, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ আকিল, ছাত্রলীগ নেতা মনসুর, জিসানের নেতৃত্বে প্রায় ৭০-৮০ জন মুখোশধারী সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে কনের বাড়িতে হামলা চালায়।
এ সময় তারা বাড়িঘর ভাঙচুর, স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুটপাট করে নিপা আক্তারকে টেনে-হিচড়ে তুলে নিয়ে যায়। এ সময় তাদের হামলায় নিপা আক্তারের মা নয়ন বেগমসহ কয়েকজন আহত হয়। তাদের চিৎকারে হামলাকারীদের ভয়ে কেউ এগিয়ে আসেনি।
৯৯৯ এ ও থানা পুলিশে বার বার ফোন করে সাহায্য চাইলেও তাদের কেউ কোনো সাহায্য করেনি বলে অভিযোগ করেন নিপা আক্তারের পিতা আব্দুল কাইয়ুম ও মা নয়ন বেগম।
এ বিষয়ে বক্তব্য নেওয়ার জন্য অভিযুক্ত জুনায়েদের মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে ফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
এ ঘটনায় আরেক অভিযুক্ত আবদুল্লাহ আল মাহমুদ আকিল বলেন, অভিযোগ সত্য নয়। তাদের সঙ্গে আমার পারিবারিক বিরোধ থাকায় আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছে।
উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুল ইসলাম রুবেল বলেন, বিষয়টি আমি অবগত নই। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।
আদ্রা দক্ষিণ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আবু ইউসুফ বলেন, আমি বিষয়টি অবগত হয়েছি। সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল ওহাবের বাড়ি ওই গ্রামে হওয়ায় বিষয়টি সমাধানে উনাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
নাঙ্গলকোট থানা ওসি দেবাশীষ চৌধুরী বলেন, বিষয়টি জানার পরই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। হামলাকারীদের গ্রেফতার ও মেয়েটিকে উদ্ধারে পুলিশ কাজ করছে।