কুমিল্লা-৭ আসনে নির্বাচনী সহিংসতা থামছে না, আহত ছাত্রলীগ নেতা শরীফ আইসিইউতে
কুমিল্লা-৭ (চান্দিনা) আসনে থামছে না নির্বাচনী সহিসংতা। প্রচারণায় শুরুর পর থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী মুনতাকিম আশরাফ টিটুর অনুসারী আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা হামলার শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সর্বশেষ বুধবার রাতে সশস্ত্র মুখোশধারীদের হামলার শিকার হয়েছেন ছাত্রলীগ নেতা শরিফুল ইসলাম শেখ। উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের ভাড়ারুয়া গ্রামের বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে ওই ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে কচুয়া সীমান্তের উজানী গ্রামে ফেলে যায় সন্ত্রাসীরা। পরে সংকটাপন্ন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়।
মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর জখম হওয়ায় শরীফ জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে আইসিইউতে আছেন। শরীফ উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মুনতাকিম আশরাফ টিটুর (ঈগল) অনুসারী।
স্থানীয়রা জানায়, কুমিল্লা-৭ চান্দিনা আসনে প্রচারণা শুরুর পর থেকে নৌকার প্রার্থী ডা. প্রাণ গোপাল দত্তের নেতাকর্মীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী টিটুর অনুসারীদের উপর সশস্ত্র হামলা চালিয়ে আসছে।
টিটুর অনুসারীদের অভিযোগ, এসব হামলায় তাদের লোকজন আহত হলেও উল্টো নৌকার অনুসারীরা মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদের হয়রানি করছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মহিউদ্দিন আহমেদ আলম বলেন, ‘নৌকার সমর্থকদের হুমকিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক অনেক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। স্বতন্ত্র প্রার্থীর ভোটারদের কেন্দ্রে না যেতে আগেই হুমকি দেয়া হচ্ছে। তাই এ আসনে এখনো সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি।’ নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ না করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনের নিকট তিনি দাবি জানান।
স্বতন্ত্র প্রার্থী মুনতাকিম আশরাফ টিটু বলেন, ‘আমার বাবা প্রয়াত অধ্যাপক আলী আশরাফ এ আসনের ৫বারের এমপি ছিলেন। দলের সম্মতি নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ায় আমার অনুসারীদের উপর সশস্ত্র হামলা চালানো হচ্ছে। কালো গ্লাসের মাইক্রোবাসে নৌকার পোস্টার লাগিয়ে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা এলাকায় মহড়া দিচ্ছে। আমার নেতাকর্মীদের উপর একের পর এক হামলা চালানো হচ্ছে। এ বিষয়ে রিটার্নিং অফিসার, পুলিশ সুপার ও স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিলেও কোন প্রতিকার পাচ্ছি না। মিথ্যা মামলা দিয়ে উল্টো আমার নেতাকর্মীদের হয়রানি করা হচ্ছে। বুধবার রাতে আমার মা রামমোহন এলাকায় ভোটের মাঠে প্রচারণায় বের হলে তাকে নৌকার সমর্থকরা হুমকি দিয়ে এলাকা ত্যাগ করতে বাধ্য করে। বিষয়টি তাৎক্ষণিক পুলিশ সুপারকে অবহিত করা হয়।’
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে নৌকার প্রার্থী ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত বলেন, ‘আমি চিকিৎসক, সংঘাত-সহিংসতায় আমি জড়িত নই। বহিরাগত কাউকে আমি চিনি না। আমিও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই।’
চান্দিনা থানার ওসি আহাম্মদ সনজুর মোরশেদ বলেন, ‘শরীফের উপর হামলায় জড়িতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।’
বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলা রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক খন্দকার মুশফিকুর রহমান সমকালকে বলেন, ‘চান্দিনায় শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টির জন্য আমরা কাজ করছি। হামলায় আহতদের বিষয়ে তদন্ত করে মামলা নিতে পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’