কুমিল্লা টাওয়ার হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় শিশুসহ প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ
কুমিল্লার টাওয়ার হসপিটালে ভুল চিকিৎসায় আসমা আক্তার (২৩) নামে প্রসূতিসহ শিশু সন্তানের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে।সিজারিয়ান অপারেশন করেন ডাক্তার চন্দনা রানী দেবনাথ।
(৫ আগষ্ট ২০২১) বৃহস্পতিবার নিহতের পিতা অটো রিক্সা চালক দয়াল হুমায়ুন অভিযোগ করেন।নিহত আসমা আক্তার কুমিল্লার আদর্শ সদর আমড়াতলি ইউনিয়নের কবিরাজ বাজারের পশ্চিমে জশপুর গ্রামের বসিরের স্ত্রী।নিহতের বাবার বাড়ি বুড়িচং উপজেলার বাকশীমূল পশ্চিমপাড়া।
নিহতের পিতা হুমায়ুন অভিযোগ করে জানান, গত (৩১ জুলাই ২০২১)শনিবার কুমিল্লা টাওয়ার হাসপাতালে হুমায়ুন তার মেয়েকে ৮ মাসের গর্ভকালীন আসমা আক্তারকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে রোগীর অবস্থা ভালো নয় বলে চিকিৎসক জানান। পরে তাকে দ্রুত সিজারিয়ান অপারেশনের কথা বলেন।টাওয়ার হসপিটালে শনিবার সকাল ৮টায় অপারেশ করেন। সেখানে একটি পুত্র সন্তান জন্ম দেন আসমা আক্তার। অপারেশনের পর সাথে সাথেই রোগী অবস্থা ভালো নয় বলে ঢাকা কোনো হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দেন কর্তব্যরত ডাক্তার। তাকে ঢাকা গ্রীণরোয ইউনিহেলথ স্পেশালাইজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই হাসপাতালে আইসিওতে থাকার পর শনিবার সন্ধ্যায় আসমা আক্তার মারা যায়।এ দিকে টাওয়ারে আইসিওতে থাকা অবস্থায় শিশু সন্তানও মারা যায়। মৃত্যুর পর নিহত পরিবার টাওয়ার হাসপাতালকে ৬০ হাজার টাকা দিতে হয়েছে বলে জানা যায়।
নিহতের পিতা হুমায়ুন আরো জানান,কুমিল্লার টাওয়ার হাসপাতালে আমার মেয়েকে ডাক্তারের কাছে দেখানোর জন্য নিয়ে যাই,সেখানে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার বলে আমার মেয়ের অবস্থা খুব খারাপ সিজার করাতে হবে। তাই আমরা সিজারের জন্য রাজি হয়ে যাই। ডাক্তার আমার মেয়েকে সিজার করিয়ে এসে বলে রোগীকে দ্রুত ঢাকা নিয়ে যান। রোগীর অবস্থা খুব খারাপ। এই কথার শোনার পর আমরা মেয়েকে ঢাকা ইউনিহেলথ স্পেশালাইজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর ১৪ ব্যাগ রক্ত দিয়েও বাঁচাতে পারিনি। পরে বাড়িতে নিয়ে আসলে মহিলারা গোসল করাতে গিয়ে দেখতে পায় আমার মেয়ের পেটে ২-৩টা কাটা।এমন সিজার আমরা কোনো দিন দেখি নাই কোনো মতে সেলাই করে রেখেছে।এই ভুল কাটার কারণে ভুল চিকিৎসায় প্রচন্ড রক্তক্ষরণ হয়ে আসমা আক্তার মারা যায়। নিহতের বাবা হুমায়ুন কুমিল্লা সিভিল সার্জন ও প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন,তদন্তপূর্বক আমার মেয়ের ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুর সঠিক বিচার চাই।তাদেরকে আইনের আওতায় আনার জন্য দাবী জানান।
নিহত আসমা আক্তার কালিকাপুর আব্দুল মতিন খসরু সরকারি কলেজের প্রাক্তন ছাত্রী ছিলেন। দয়াল হুমায়ুনের এক মাত্র মেয়ে আসমা আক্তারে মৃত্যুর পর পরিবারের কান্না কোনো ভাবেই থামছে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুমিল্লা টাওয়ার হাসপাতালের ডাক্তার ডাক্তার চন্দনা রানী দেবনাথ মোবাইল ফোনে প্রতিনিধিকে জানান, ‘রোগীর পরিবারের অভিযোগ সঠিক নয়। কোনও ভুল চিকিৎসার প্রশ্নই ওঠে না। রোগীর অনেক সমস্যা ছিলো তাই তাকে ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলেছি।আমাদের এখানে রোগীকে সম্পূর্ণ সঠিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তাদের অভিযোগের কোনও যৌক্তিকতা নেই। আপনাদের কাছে রোগীর পরিবার অভিযোগ দেয় কেন? আপনি কোনো ডাক্তার না, আপনি হলেন সাংবাদিক, আপনি কোনো কিছু বুঝবেন না, যদি ডাক্তারি শিখতে চান তাহলে আমার কাছে আসিয়েন।এসব অভিযোগ নিয়ে কথা না বলার বারং করেন। এ কথা বলে তিনি অনেক রোগী তার সামনে আছে এমন অজুহাত দেখিয়ে কল কেটে দেন।