মৌসুমীর উপলব্ধিকে স্বাগত জানালেন শায়খ আহমাদুল্লাহ
দেশের চিত্রনায়িকা মৌসুমী নিজের জীবনের শেষ কিছু ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন- আমার কয়েকটি ইচ্ছে আছে, একটি হলো আমি মারা যাওয়ার পর আমার লাশ যেন কাউকে দেখতে দেওয়া না হয়। যেন খুব সিক্রেটলি কবর দেওয়া হয়। জানাজা হবে। কিন্তু আমি চাই না আমাকে আর কেউ দেখুক।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি মারা যাওয়ার পর টিভিতে ধুমধাড়াক্কা ছবি এবং দশর্কদের কাছে অনেক ছবি রয়ে গেছে সেগুলো মুছে দেবেন। তবে ছবি যদি সংগ্রহ করতে হয় তাহলে মৌসুমী আর্কাইভে আলাদাভাবে সংরক্ষণ করতে হবে। সেখানেই সবাই আমার সবকিছু জমা দিয়ে দেবেন। যদি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আমার কোনো কাজ মনে হয় আর্কাইভে রাখলে ভালো হবে বা গবেষণার কাজে আসবে তবে সে উদ্দেশ্যই ছবিগুলো সংরক্ষণ করা হবে। অবশ্যই বাছাইকৃত ছবিগুলো জমা দেওয়া হবে, এ ছাড়া অন্য সবকিছু মুছে দিলে ভালো হয়।’
মৃত্যুর আগে হজে যাওয়ার ইচ্ছার কথা জানিয়ে মৌসুমী বলেন, আমি মারা যাবার আগে বড় হজ করতে চাই। আমি যেন হজ করতে পারি সেজন্য সবাই দোয়া করবেন। মৌসুমীর এমন সিদ্ধান্তের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন ইসলামিক আলোচক শায়খ আহমাদুল্লাহ। গতকাল বুধবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে দেওয়া এক স্ট্যটাস দেন তিনি।
সেখানে তিনি লিখেছেন, অভিনয় জীবনের ত্রিশটি বছর পার করার পর বাংলাদেশের সুপরিচিত এক অভিনেত্রী দর্শকদের কাছে অনুরোধ করেছেন, যাদের কাছে তার ‘ধুমধাড়াক্কা’ ছবি (সিনেমা) সংরক্ষিত আছে, মৃত্যুর পর সবাই যেন তা ডিলিট করে দেয়। তাছাড়া মৃত্যুর পর তার লাশ যেন কেউ না দেখে, দ্রুত গোপনে যেন তাকে দাফন করা হয়—এমন অনুরোধও ব্যক্ত করেছেন তিনি। গত কয়েক বছর ধরে এদেশের সর্বসাধারণের মধ্যে দীন পালনের যে আকাঙ্ক্ষা পরিলক্ষিত হচ্ছে, এই ঘটনা তারই ধারাপরম্পরা।
আলোচিত এই নায়িকা স্টুডিওতে বসে ক্যামেরার সামনে যখন কথাগুলো বলেন, তখন ক্যামেরার পেছনে কোনো ক্যামেরাম্যান ছিল না। নায়িকাকে নির্জনে বিশেষ কিছু বলবার জন্যে উপস্থাপক বেরিয়ে গিয়েছিলেন স্টুডিও থেকে। এমন একান্ত মুহূর্তে গভীরভাবে লালন করা আত্মগত বিশ্বাসই মানুষ নিবিড়ভাবে ব্যক্ত করে। যেন নিজের সঙ্গে নিজের গোপন বিশ্বাসের কথা বলা। নায়িকার এই উপলব্ধিকে আমরা স্বাগত জানাই।
নারী-স্বাধীনতার মুখরোচক স্লোগানে আত্মহারা হয়ে অনেক বোন নারিত্বের খোলস ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে আসেন। যাকে তারা মুক্তির উজ্জ্বল দীপশিখা ভেবে উন্মত্ত হন, দিন শেষে বুঝতে পারেন, আসলে তা অগ্নিগহ্বর ছাড়া কিছু নয়। কিন্তু সেই উপলব্ধি আসতে আসতে জীবনের অনেক কিছুই তারা হারিয়ে ফেলেন। আলোচিত নায়িকা তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ।
প্রিয় বোন, এমন ক্যারিয়ার গড়বেন না, যেখান থেকে দীনে ফিরে আসাটা দুর্গমগিরি কান্তার মরু পাড়ি দেয়ার মতো কঠিন হয়ে যায়। লাইফস্টাইল ও ক্যারিয়ার বাছাইয়ে সতর্ক না হলে হয়তো এমন দিন আসবে, যখন আপনার বোধোদয় হবে, কিন্তু পৃথিবীর বুক থেকে আপন পাপের চিহ্ন মুছে ফেলতে পারবেন না। সেদিন আপনার আফসোসই বাড়বে শুধু।