কুমিল্লার লালমাই লাউয়ের কদর দেশব্যাপী
সবজি চাষের জন্য বিখ্যাত কুমিল্লা লালমাই উপজেলা। এখানে বিভিন্ন ধরনের শীতকালীন সবজি চাষ হয়। তার মধ্যে অন্যতম লাউ। প্রতি বছরের মতও কৃষকরা এবারো লাউয়ের চাষ করেছে। তবে অন্য বছরের তুলনায় এবার দাম ভালো পাচ্ছে বলে জানান স্থানীয় কৃষকরা।
এখানকার লাউয়ের কদর দেশব্যাপী। খরচের চেয়ে লাভ বেশি হওয়া লাউ চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে স্থানীয় কৃষকরা। উপজেলার সব এলাকায় লাউয়ের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এলাকার চাহিদা মিটিয়ে এখন চট্টগ্রাম শহর, ফেনী, নোয়াখালী, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে লালমাই উৎপাদিত লাউ সরবারহ করা হচ্ছে।
চাষিরা বলেছেন, অন্য সবজির চেয়ে লাউ চাষ লাভজনক। লাউ চাষে উৎপাদন ব্যয় কম অথচ আয় বেশি হওয়ায় দিন দিন কৃষকরা লাউ চাষের দিকে ঝুঁকছে।
লালমাই এলাকার কৃষক মমতাজ মিয়া বলেন , ৪০ শতক জমি বর্গা নিয়ে লাউ চাষ শুরু করি। লাউ চাষে আমাদের খরচ হয়ে ৩৪ হাজার টাকা। ইতিমেধ্যে প্রায় ৮৫ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করেছি। আরো কিছুদিন বিক্রি করতে পারবেন বলে জানায়।
একই এলাকার কৃষক মনির হোসেন জানান, পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় লাউ চাষের মাচাং তৈরির প্রয়োজনীয় শলাকা ও খুঁটি হাতের কাছে পাওয়া যায়। ফলে এ এলাকায় লাউ চাষের মাচাং তৈরি ও ক্ষেত পরিচর্যায় খরচ কম।
উপজেলার মধ্যম লালমাই ঘুরে দেখা গেছে, সকাল নয়টার মধ্যে বাজারে নেয়ার জন্য জমি থেকে লাউ তুলে সেখানে জমা করেছেন প্রায় ২৫ জন কৃষক। তারা সেখান থেকে পিকআপ যোগে নিমসার নিয়ে যাবেন। এখন প্রতি পিছ লাউ প্রথমে ৫০ টাকা করে পাইকারী বিক্রি করেছেন। এখন ৩৫ থেকে ৪০ টাকা করে বিক্রি করছেন। ভালো দাম পাওয়ায় তারা খুশি।
চাষিদের থেকে পাইকারী লাউ কিনে নিচ্ছেন আমিনুল ইসলাম নামে একজন পাইকার।
আমিনুল বলেন, আমি চাষিদের কাছ থেকে ৩০-৩৫ টাকা দরে লাউ কিনে নিয়ে তা শহর থেকে আসা পাইকারী ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করবো। গাড়ি ভাড়া, শ্রমিক খরচ, বাজারের টোল দেয়ার পর প্রতি পিছ লাউয়ে আমার ৮-১০ টাকা লাভ হয়।
এ বিষয়ে কুমিল্লা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপ-পরিচালক আইউব মাহমুদ বলেন, লালমাই এলাকার আবহাওয়া লাউ চাষের অনুকূল। তাছাড়া প্রয়োজনীয় কৃষি সামগ্রী এখানে সহজলভ্য। এসব সুযোগ সুবিধাগুলো কাজে লাগিয়ে কৃষকরা লাউ চাষ করছেন। কৃষি অফিস থেকেও চাষিদের নিয়মিত বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করছেন বলে জানান।