কুমিল্লায় শুকনো স্থানে ত্রাণ দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে আইজিপি ও র্যাবের মহাপরিচালককে অবরুদ্ধ
কুমিল্লায় বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করতে প্রত্যন্ত অঞ্চলে না যাওয়ায় পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. ময়নুল ইসলাম ও র্যাবের মহাপরিচালক একেএম শহিদুর রহমানকে অবরুদ্ধ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
রোববার বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত কুমিল্লা জিলা স্কুল মাঠে (মূল ফটকের কাছাকাছি) তাদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। এ সময় পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে বিকাল সোয়া ৩টার দিকে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করতে হেলিকপ্টার যোগে কুমিল্লায় আসেন আইজিপি মো. ময়নুল ইসলাম ও র্যাবের মহাপরিচালক একেএম শহিদুর রহমান। হেলিকপ্টারে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় ইদগাহ মাঠে অবতরণ করেন তারা। পরে কুমিল্লা জিলা স্কুলে বানভাসি মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করতে যান।
এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা হৈচৈ শুরু করলে তারা মঞ্চে না উঠেই কয়েকজন বানভাসি মানুষকে ত্রাণ দিয়ে গাড়িতে উঠে সার্কিট হাউসের দিকে যাওয়ার পথে জিলা স্কুলের মূল ফটক বন্ধ করে দেয় শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি এখানে কোন বন্যার্ত ছিল না। ফটো সেশনের জন্যই এমন ত্রাণ বিতরণের আয়োজন করা হয়েছে। আইজিপি এবং র্যাব মহাপরিচালককে বন্যার কেন্দ্রস্থলে যাওয়ার জন্য আহ্বান করেন তারা।
এ সময় হ্যান্ডমাইকে প্রতিবাদ জানাতে দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের। তাদের বলতে শোনা যায়, এটা কি ভিজিট? জিলা স্কুল কি পুলিশের? আমরা এখানে আজকে তিন দিন কাজ করছি, একজন পুলিশ আসছে আমাদের সঙ্গে কথা বলতে? এখানে আশ্রয় নেওয়া বাচ্চাগুলো চিকিৎসা পায় না। যাদের ত্রাণ দিতে এসেছেন, তারা কি বন্যার্ত? তাদের অনেককে জিজ্ঞেস করেছি, কেউ এসেছে নগরীর ধর্মপুর থেকে, কেউ এসেছে চর্থা থেকে। ওইদিকে কি বন্যা আছে? বন্যাদুর্গত এলাকায় না গিয়ে শুকনো স্থানে ত্রাণ দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে আইজিপি ও র্যাবের মহাপরিচালককে অবরুদ্ধ করা হয় বলে জানিয়েছেন কয়েকজন শিক্ষার্থী।
বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত তাদের অবরুদ্ধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা। আধাঘণ্টা ধরে বেশ কিছু দাবি পেশ করা হয় শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে। কুমিল্লার পুলিশ সুপার সাইদুল ইসলাম ও জেলা প্রশাসক খন্দকার মুশফিকুর রহমান শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। বিকাল ৪টার দিকে জিলা স্কুলের ফটক খুলে দিলে গাড়িবহর নিয়ে কুমিল্লা সার্কিট হাউসের দিকে চলে যান আইজিপি ও র্যাবের মহাপরিচালক।
পরে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার একটি পিকআপ ভ্যান (চালক ও জ্বালানিসহ) পরবর্তী ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য শিক্ষার্থীদেরকে দেওয়া হয়।