কুমিল্লায় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি’র হাতে স্কুল শিক্ষিকা লাঞ্ছিত
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার সৌন্দ্রম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ফরহাদ খানের হাতে স্কুলের সহকারী শিক্ষিকা সৈয়দা হনুফা আক্তার লাঞ্ছিতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার সকালে স্কুল চলাকালীন সময়ে এঘটনা ঘটে। এনিয়ে এলাকায় তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরে স্কুলের শিক্ষকবৃন্দসহ শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে। এদিকে ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবী করছেন লাঞ্ছিত ওই শিক্ষিকা।
স্থানীয় বিভিন্ন সুত্রে জানা যায়, কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ভারেল্লা দক্ষিণ ইউনিয়নের সৌন্দ্রম গ্রামে সৌন্দ্রম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অবস্থান। আজ বৃহস্পতিবার স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন। এ উপলক্ষে গত বেশ ক’দিন ধরে সভাপতিসহ সাধারণ সদস্য প্রার্থীরা ভোট প্রার্থনা করছেন বিরামহীনভাবে।
স্কুলের সহকারী শিক্ষিকা সৈয়দা হনুফা আক্তার জানান, ভোট নিয়ে প্রার্থীদের দৌড়ঝাপে সহযোগীতার জন্য স্কুলের বর্তমান কমিটির সভাপতি এবং নির্বাচনে সভাপতি প্রার্থী ফরহাদ খান তাকে কাজ করতে চাপ দেয়। এঅবস্থায় গত দু’দিন তিনি মোবাইল ফোন বন্ধ করে রাখেন। এরই এক পর্যায়ে মঙ্গলবার হনুফা আক্তার একই ইউনিয়নে তার মামা বাড়িতে বেড়াতে যায়। এদিকে মঙ্গলবার রাতে সভাপতি ফরহাদ খান হনুফা আক্তারের গ্রামের বাড়িতে ওই ইউনিয়নের শোভারামপুর গ্রামে যায়। সেখানে তাকে মামার বাড়ি গ্রামের কথা বললে রাত প্রায় ২ টায় সভাপতি সেখানে যায় হনুফার খোজেঁ। এসময় তার মামা আশ্বস্থ করলে ফরহাদ খান চলে আসেন।
হনুফা আক্তার আরো বলেন, গতকাল বুধবার সকালে তিনি স্কুলে আসলে বেলা আনুমানিক সাড়ে ১০ টায় সভাপতি একটি কাগজ নিয়ে এসে তাকে স্বাক্ষর করতে বলেন। তখন তিনি অস্বীকৃতি জানালে সভাপতি গালাগাল করে তার হাত ধরে টানাটানি করতে থাকেন। এসময় শিক্ষকা আত্নরক্ষার্থে ছুটে দৌড়ে পাশের একটি কক্ষে ঢুকে দরজা লাগানোর চেষ্টা করলে ফরহাদ খান সেখানে ছুটে গিয়ে দরজায় প্রচন্ড জোড়ে লাথি মারেন। এতে দরজা খুলে হনুফা আক্তারের শরীরে আঘাত লাগে। তার চিৎকারে এসময় ভয়ে কেউ এগিয়ে আসেনি। পরে সভাপতি তাকে অশ্লীলভাষায় গালমন্দ করে। তখন স্কুলের একজন দপ্তরী এসে তাকে উদ্ধার করেন। এদিকে ঘটনার পর স্কুলের শিক্ষকসহ শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হলেও প্রকাশ্যে কেউ প্রতিবাদ করেনি। তবে দ্বিতীয় শিফটে শিক্ষকরা ক্লাস বর্জন করে। শিক্ষার্থীরাও এতে সায় দেয়।
এদিকে খবর পেয়ে স্থানীয় দেবপুর ফাঁড়ির আইসি আবু ইউসুফ ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। এব্যাপারে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমানের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি ঘটনার সময় স্কুলে ছিলাম না। তবে এঘটনার তীব্র নিন্দাসহ বিচার দাবী করছি।
দেবপুর ফাঁড়ির আইসি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এখনো কোন অভিযোগ পাইনি, অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।
বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমরুল হাসান বলেন, আমি সাংবাদিকদের মাধ্যমে বিষয়টি জেনেছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। এব্যাপারে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।