কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় প্রেমিকাকে হত্যার পর লাশ নদীতে নিক্ষেপ
ডেস্ক রিপোর্টঃ কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় এক মাদ্রাসাছাত্রীকে কৌশলে ডেকে নিয়ে পেটে ছুরিকাঘাত করে হত্যার পর লাশ নদীতে ফেলে দেয় তার প্রেমিক। লাশ উদ্ধারের দীর্ঘ ৬ মাস পর পরিচয় সনাক্ত করেন পরিবারের সদস্যরা। পুলিশ হত্যাকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পরে ঘাতক জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে দায় স্বীকার করে হত্যার বর্ণনা দিয়েছেন।
পুলিশ জানায়, উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের কান্দুঘর দাখিল মাদ্রাসার ৯ম শ্রেণির ছাত্রী কান্দুঘর গ্রামের মৃত আবদুল কাদেরের মেয়ে আয়শা আক্তারকে (১৫) খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না মর্মে গত ৩ আগস্ট তার মা সাজেদা খাতুন বাদী আদালতে মামলা করেন। পরে আদালত তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যাবস্থা নেয়ার জন্য ব্রাহ্মণপাড়া থানায় মামলাটি প্রেরণ করেন। মামলায় মুরাদনগর উপজেলার রহিমপুর গ্রামের আলী আজগরের ছেলে সিএনজি অটোরিকশা চালক মো. জাবেদকে অভিযুক্ত করা হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়, জাবেদ আয়শাকে প্রায়ই প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে বিরক্ত করতেন এবং প্রায়ই কান্দুঘরে আয়শাদের বাড়িতে আসা যাওয়া করতেন।
সাজেদা খাতুন জানান, জাবেদ তার মেয়েকে ফুসলিয়ে মুরাদনগর নিয়ে গণধর্ষন করে লাশ গুম করেছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসি (তদন্ত) সামসউদ্দিন মোহাম্মদ ইলিয়াস গত জানুয়ারি থেকে বিভিন্ন থানায় উদ্ধারকৃত অজ্ঞাত লাশের ছবি সংগ্রহ করে তদন্ত করতে থাকেন। গত ৪ মার্চ মুরাদনগর থানায় গোমতী নদীর পাড় থেকে অজ্ঞাত নারীর লাশ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। তদন্তের এক পর্যায়ে ওই ছবি মামলার বাদী ও তার পরিবারের সদস্যদের দেখালে তারা সেটি আয়শা আক্তারের বলে সনাক্ত করেন। পরে ৪ আগস্ট মুরাদনগর থানা পুলিশ জাবেদকে গ্রেফতার করে কুমিল্লা জেল হাজতে পাঠায়। এরপর ব্রাহ্মণপাড়া থানার ওসি (তদন্ত) আসামি জাবেদকে রিমান্ডে এনে ব্যাপক জিজ্ঞাবাদ করার পর এক পর্যায়ে তিনি হত্যার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। পরে ২ সেপ্টেম্বর জাবেদকে কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সামসুর রহমানের আদালতে হাজির করলে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
ওসি সামসউদ্দিন মোহাম্মদ ইলিয়াস বলেন, জবানবন্দিতে জাবেদ জানান- আয়শার সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এরই সূত্র ধরে আয়শার বাড়িতে যাতায়াত ছিল। তিনি আয়শার পরিবারকে প্রায়ই আর্থিক সহযোগীতা করতেন। এর মধ্যে আয়শার মা তার কাছ থেকে দেড় লাখ টাকা ধার নিয়েছিল। সেই টাকা ফেরত চাইলে আয়শার সঙ্গে তার দন্দ্ব শুরু হয়। এক পর্যায়ে ১ মার্চ আয়শাকে ফুসলিয়ে মুরাদনগর নিয়ে যন। সেখানে রাত ৮টার দিকে কুমিল্লা-সিলেট সড়কের কোম্পানীগঞ্জ ব্রিজের ওপর টাকা নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে আয়শাকে ছুরিকাঘাত করে হত্যার পর লাশ গোমতী নদীতে ফলে দেন।