সব থেকেও চালু হচ্ছে না কুমিল্লা বিমানবন্দর
ডেস্ক রিপোর্টঃ সব সুযোগ-সুবিধা, ব্যবস্থাপনা, যন্ত্রপাতি, জনবল এবং প্রতি মাসে দুই কোটি টাকার বেশি আয় থাকার পরও উদ্যোগের অভাবে তিন যুগ ধরে বন্ধ রয়েছে কুমিল্লা বিমানবন্দর। অথচ রানওয়ে মেরামত করলেই কুমিল্লা বিমানবন্দর থেকে অভ্যন্তরীণ রুটে স্টল বিমান চলাচলের পাশাপাশি কলকাতা, আগরতলাসহ বিভিন্ন রুটে বিমান চলাচল সম্ভব হতো। এতে কুমিল্লার মানুষ স্বচ্ছন্দে দেশের বিভিন্ন স্থানে এবং আন্তর্জাতিক রুটেও চলাচল করতে পারত এবং বাঁচাতে পারত মূল্যবান সময়। সেই সঙ্গে কুমিল্লা ইপিজেডসহ ব্যবসা-বাণিজ্যেও উন্নতি লাভ করত কুমিল্লা।
বিমানবন্দর সূত্র জানায়, বাংলাদেশে তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, পাঁচটি অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর এবং সাতটি সট টেক অফ অ্যান্ড ল্যান্ডিং (স্টল) বিমানবন্দর রয়েছে। এই সাতটি স্টল বিমানবন্দরের মধ্যে কুমিল্লা বিমানবন্দর একটি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ১৯৪১-৪২ সালে নির্মাণ করা কুমিল্লা বিমানবন্দর থেকে ১৯৮৬ সালের আগ পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ রুটে বিমান চলাচল করেছিল। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর স্টল বিমান সার্ভিস সুবিধাসহ কুমিল্লা বিমানবন্দর এলাকার পাশে রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর উদ্বোধন করেন। সেই সময় তিনি স্টল বিমান সার্ভিস চালুর ঘোষণাও দেন। কিন্তু গত ৩১ বছরেও এ বিমানবন্দরে কোনো বিমান ওঠানামা করেনি। মাঝেমধ্যে কোনো ভিআইপি হেলিকপ্টারে করে এই বিমানবন্দরে অবতরণ করেছেন মাত্র।
কুমিল্লা বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লা বিমানবন্দর এখনো চালু অবস্থাতেই আছে। শুধু বিমান ওঠে না এবং নামে না। এ বিমানবন্দর থেকে আন্তর্জাতিক রুটে চলাচলকারী সব বিমানকে আকাশপথের সিগন্যাল দেওয়া হয়। আর এ কাজ করে কুমিল্লা বিমানবন্দর প্রতি মাসে আয় করে দুই কোটি টাকা। কুমিল্লা বিমানবন্দরে নেভিকেশন ফ্যাসিলিটিস, কন্ট্রোল টাওয়ার, ভিএইচএফ সেট, এয়ার কমিউনিকেশন যন্ত্রপাতি, ফায়ার স্টেশন, ফায়ার সার্ভিসসহ সব সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। যাত্রীদের জন্য আলাদা রুমও আছে। এ ছাড়া ডিসেম্বরের মধ্যেই আট কোটি টাকা ব্যয়ে কুমিল্লা বিমানবন্দরে সর্বাধুনিক বিমান পথনির্দেশক (ভিউআর) এবং বিমানের দূরত্ব মাপক ডিএনই স্থাপন করা হচ্ছে। আর এই আধুনিক যন্ত্রপাতি সরবরাহ করছে দক্ষিণ কোরিয়ার একটি কম্পানি।
কুমিল্লা বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক আবদুল গনি জানান, বর্তমানে বিমানবন্দরে ২২ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারী চাকরিরত আছেন। প্রতি মাসে এ বিমানবন্দর আন্তর্জাতিক বিমানের সিগন্যাল দিয়ে দুই কোটি টাকার কমবেশি রাজস্ব আয় করছে। প্রতিদিন গড়ে ২৫-৩০টি বিমান কুমিল্লা বিমানবন্দরের সিগন্যাল নেয়।
তিনি আরো জানান, চাইলেই বিমানবন্দরটিতে অভ্যন্তরীণ রুটে বিমান চলাচল শুরু করা যায়। এ জন্য রানওয়ে ও কিছু অবকাঠামো স্থাপন করতে হবে। শুধু রানওয়ে মেরামত করলেই কুমিল্লা বিমানবন্দরে ৩০ থেকে ৮০ সিটের যেকোনো বিমান ওঠানামা সম্ভব। জনবলও রয়েছে।
সূত্রঃ কালেরকণ্ঠ