কুমিল্লার কান্দিখাল দখলে যে ৪০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান
নগরীর জলাবদ্ধতা সমস্যা সমাধানে কান্দিখাল উদ্ধারের ঘোষণা দিয়েছে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক)। বৃহস্পতিবার নগর মিলনায়তনে কান্দিখাল দখলকারী চার সরকারি প্রতিষ্ঠান, ৩৬ জন ব্যক্তি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নাম, ঠিকানা দখলি জমির পরিমাণ, স্থাপনার বিতরণ, আর এস, বিএস ও খতিয়ান নম্বর প্রকাশ করা হয়। গত বছর সরকারি চার প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে ১১ কর্যদিবসে এ জরিপ করা হয়েছে।
কুসিক সূত্রমতে, ৪০ দখলদারের মধ্যে সরকারি চার প্রতিষ্ঠান কান্দিখাল দখল করেছে। যার মধ্যে সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের পাকা বাউন্ডারি ওয়াল রয়েছে ১০.৫৬ শতক ভূমির ওপর। সামাজিক বন বিভাগের বাউন্ডারি ওয়াল রয়েছে ৩.৫৬ শতক। পানি উন্নয়ন বোর্ডের ওয়াল রয়েছে প্রায় দুই শতক জমির ওপর। শাকতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথমতলা পাকা ভবন ১.৩২ শতক জমি দখল করার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও কুমিল্লা মডার্ন হাসপাতালসহ ৩৬ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান এ দখলের তালিকায় রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, দখলে অভিযুক্ত স্থান সমূহের বেশির ভাগ অংশে পাকা বাউন্ডারি ওয়াল রয়েছে। কিছু কিছু স্থানে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও ইমারত রয়েছে।
দখলের বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওলিউজ্জামান বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমার জানা নেই। কুমিল্লায় যোগদান করেছি দেড় মাস হয়েছে। ইতোপূর্বে কেউ আমাকে জানায়নি। আমি জেনে বিস্তারিত বলতে পারব।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রেজা-ই-রাব্বি বলেন, আমাদের অংশে সাড়ে দশ শতক ভূমি রয়েছে। যার মধ্যে সড়ক ভবনের ফটক ও দেয়াল আছে। তা অপসারণ ও নতুনভাবে তৈরি জন্য টেন্ডার করা হয়েছে। জলাবদ্ধতার সমাধানে সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। এখানে বন বিভাগেরও জমি আছে। যদি সবাই আন্তরিক হয়, নগরবাসী কষ্ট থেকে মুক্তি পাবে।
অভিযোগ অস্বীকার করে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাজী মোহাম্মদ নুরুল করিম বলেন, আমাদের কোন জমি কান্দিখালে নেই। আর সিটি করপোরেশন বলছে পাকা বাউন্ডারি ওয়াল রয়েছে। অথচ আমরা এখনো বাউন্ডারি ওয়াল তৈরি করিনি। আর এ বিষয়ে কোন দপ্তর থেকে আমরা চিঠি পাইনি।
এ বিষয়ে মেয়র মো. মনিরুল হক সাক্কু বলেন, নগরীর টমছমব্রিজ থেকে নোয়াগাঁও চৌমুহনী পর্যন্ত খালে ৪০ জনের দখলে আছে। এর মাঝে পানি উন্নয়ন বোর্ড, সড়ক ও জনপথ, বন বিভাগ ও শাকতলা স্কুল কান্দিখাল দখল করেছে। অন্যদিকে পূর্বে যেখানে খাল ছিলো কুমিল্লা-নোয়াখালী ফোরলেনের কাজের কারণে অর্ধেক খাল ভরাট করা হয়েছে। যা শহরে জলাবদ্ধাতার বড় কারণ। এ খাল উদ্ধারের জন্য স্থানীয় এমপি মহোদয়ের সাথে আলাপ হয়েছে। জেলা প্রশাসকের সহযোগিতায় আমরা কান্দিখাল দখলমুক্তের পর আরও সম্প্রসারিত করব। খালের দুই পাশে ওয়াল তৈরি করব। গত বছর সিটিতে জলাবদ্ধতা ছিল না। এখন যেহেতু সমস্যা দেখা দিয়েছে, আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত সমাধান করতে।
মেয়র আরও বলেন, গত বছর শিক্ষাবোর্ড অফিস থেকে টমছমব্রিজ পর্যন্ত এ অংশেরও জরিপ হবে। এ জরিপ শেষে আমরা অভিযানে যাব।
এ বিষয়ে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান জানান, জলাবদ্ধতা নিয়ে আমি কোন মন্তব্য করব না। যদি মেয়র সাহেব সহযোগিতা চান, আমি সহযোগিতা করব।