কক্সবাজারে চেয়ারে বসিয়ে চেঞ্জিং রুমে বাবা-মা, মেয়ে ভেসে উঠল সুইমিংপুলে

স্ত্রী-সন্তান নিয়ে সমুদ্র সৈকত উপভোগ করতে কক্সবাজারে এসেছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের যাত্রাবাড়ী গোলাপবাগ ওয়ারী এলাকার মনিরুজ্জামান খান। কক্সবাজার পৌঁছে মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) বেলা ২টার দিকে তারকা হোটেল ওশান প্যারাডাইসে উঠেন মনিরুজ্জামানের পরিবার। বিকেল সোয়া ৫টার দিকে স্ত্রী-সন্তানসহ যান সুইমিংপুলে। ছেলে ও মেয়েকে পুলের পাশে কীট কট চেয়ারে বসিয়ে চেঞ্জিং রুমে যান বাবা-মা দুজন। এরই মাঝে ভাইকে ফাঁকি দিয়ে গোসলরত অন্য পর্যটকদের দেখায় পুলের পানিতে নেমে যান মনিরুজ্জামানের চার বছর বয়সী মেয়ে সাফানা খান (৪)।

যে যার মতো ব্যস্ত থাকায় কেউ খেয়াল করেনি এটা। বাবা-মা এসে মেয়েকে না দেখে খুঁজতে থাকলে এটেন্ডেন্ট বয় পুল থেকে সাফানাকে তুলে আনেন। এসময় অন্য পর্যটকরাও এগিয়ে এসে শিশুটি পেট থেকে পানি বের করেন। এসময় সাফানা মুমূর্ষু হলে তাকে দ্রুত কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এসময় হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মনিরুজ্জামানের দেয়া লিখিত পত্রে এসব কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে আরো লেখা হয়, নিজেদের অসাবধানতায় তাদের বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে। এতে হোটেল কর্তৃপক্ষের কোনো গাফিলতি নেই।

রৈনামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) বিকাল সাড়ে ৫ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত সাফানা খান ঢাকা ওয়ারী গোলাপবাগের মনিরুজ্জামান খানের কন্যা।

হোটেল ওশান প্যারাডাইসের জনসংযোগ কর্মকর্তা সায়ীদ আলমগির বলেন, হোটেলে পাশাপাশি দুটি সুইমিং পুল। একটি বাচ্চাদের অপরটি বড়দের। অভিভাবকরাই বাচ্চাদের তাদের সুইমিং পুলে সুইমিং করান। একসাথে ২০-২৫ পরিবার সুইমিংপুলে নামেন। একাধিক বাবা-মা বাচ্চাদের সুইমিংয়ে নামান। কিন্তু মঙ্গলবার হোটেলে ওঠা পর্যটক দম্পতি মনিরুজ্জামানরা অসচেতনতায় বাচ্চাদের রেখে একসাথে চেঞ্জিং রুমে যান। আর বেখেয়ালে শিশু সাফানা পুলে পড়ে যান। মুহূর্তে মনিরুজ্জামান পরিবারের আনন্দ বিষাদে রূপ নেয়। সমুদ্র দেখাতে জীবিত এনে মাত্র কয়েক ঘণ্টার মাথায় মেয়ের লাশ নিয়ে ঘরে ফিরছেন তারা। এটা চরম হৃদয়বিদারক।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি রকিবুজ্জামান বলেন, মনিরুজ্জামান লিখিত দিয়েছেন হোটেলের সুইমিংপুলে গোসল করতে গিয়ে অসাবধানতাবশত তার মেয়ে সাফানা খান সুইমিংপুলের পানিতে ডুবে যায়। তাকে দ্রুত উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় হোটেলের বিরুদ্ধে তার কোন অভিযোগ নেই উল্লেখ করায় পরিবারের কাছে শিশুটির মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। তারা মরদেহ নিয়ে রাতেই ঢাকার উদ্দেশ্যে কক্সবাজার ত্যাগ করে।

আরো পড়ুন