থাকবে না রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র সংগঠন
কোনো রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র, শিক্ষক ও শ্রমিক সংগঠন, ভাতৃপ্রতিম বা যে কোনো নামেই হউক না কেন, না থাকার বিধান করার সুপারিশ করেছে সংস্কার কমিশন। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টার কাছে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন পুরো নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের নয় পৃষ্ঠার সুপারিশ জমা দেয়। এতে এমন সুপারিশ করা হয়েছে।
রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন:
(ক) নতুন দল নিবন্ধনের শর্ত শিথিলের লক্ষ্যে ১০% জেলা এবং ৫% উপজেলা/থানায় দলের অফিস এবং ন্যূনতম ৫,০০০ সদস্য থাকার বিধান করা।
(খ) দলের সাধারণ সদস্যদের তালিকা প্রস্তুত করে তা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা এবং উক্ত তালিকা প্রতিবছর একবার হালনাগাদ করা।
(গ) আইসিটি আইনে সাজাপ্রাপ্ত সকল ব্যক্তিকে কোনো দলের সাধারণ সদস্য/কমিটির সদস্য হওয়ার অযোগ্য করা।
(ঘ) গুরুতর মানবাধিকার (বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম, অমানবিক নির্যাতন, সাংবাদিকদের/মানবাধিকারকর্মীর ওপর হামলা, অর্থ পাচার) লঙ্ঘনকারীদের বিষয়ে প্রণীত একটি বিশেষ আইনের অধীনে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে সৃষ্ট আদালতে অভিযোগপত্র গৃহীত হলে সে সব ব্যক্তিদেরকে কোনো দলের সাধারণ সদস্য/কমিটির সদস্য হওয়ার অযোগ্য করা।
(ঙ) দলের সাধারণ সদস্যদের গোপন ভোটে দলের স্থানীয় থেকে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত সকল কমিটি নির্বাচিত করা।
(চ) দলের সাধারণ সদস্যদের গোপন ভোটে প্রতিটি নির্বাচনী এলাকা থেকে সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য তিনজনের একটি প্যানেল তৈরি এবং তা থেকে দলীয় মনোনয়ন প্রদানের বিধান করা।
(ছ) দলের সদস্যদের চাঁদা ন্যূনতম ১০০ টাকা ও কোনো ব্যক্তির কাছ থেকে অনুদান হিসেবে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা নেওয়ার বিধান করা। এ অনুদান ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে গ্রহণের বাধ্যবাধকতা সৃষ্টি এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ট্যাক্স রিটার্নে প্রদর্শনের বিধান করা।
(জ) দলের তহবিল ব্যবস্থাপনায় বর্তমানে বিদ্যমান ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে নিবন্ধিত দল কর্তৃক বাৎসরিকভাবে দাখিলকৃত অডিটেড আয় ও ব্যয়ের হিসাব কমিশন কর্তৃক বাধ্যতামূলকভাবে নিরীক্ষণের বিধান করা।
(ঝ) দলের লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র, শিক্ষক ও শ্রমিক সংগঠন, ভাতৃপ্রতিম বা যে কোনো নামেই হউক না কেন, না থাকার বিধান করা।
(ঞ) দলের, যে কোনো নামেই হউক না কেন, বিদেশি শাখা না থাকার বিধান করা।
(ট) দলের সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নের জন্য দলের তিন বছরের সদস্য পদ থাকা বাধ্যতামূলক করা।
(ঠ) প্রতি ৫ বছর পর পর দল নিবন্ধন নবায়ন বাধ্যতামূলক করা।
(ড) পর পর দুটি নির্বাচনে অংশ না নিলে দলের নিবন্ধন বাতিলের বিধান বাতিল করা।
সংসদীয় এলাকার সীমানা নির্ধারণ:
(ক) সংস্কার কমিশন কর্তৃক প্রণীত আন্তর্জাতিক অনুসরণীয় নীতিমালার আলোকে সংস্কার কমিশন প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী সংসদীয় এলাকার সীমানা নির্ধারণ করা ।
(খ) ভবিষ্যতে সীমানা নির্ধারণের জন্য একটি আলাদা স্বাধীন সীমানা নির্ধারণ কর্তৃপক্ষ গঠন করা।
সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলো দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার পর সংস্কার কার্যক্রম শুরু করবে অন্তবর্তী সরকার।